পঞ্চগড়ে নিখোঁজের ২ দিন পর শিশুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটী ইউনিয়নের নায়েকপাড়া এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার দু’দিন পর মোবাশ্বের হোসেন (৫) নামে একটি শিশুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ।

পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারী ডোমার থানার ভোগডাপুরী ইউনিয়নের সব্দিগঞ্জ ফরেস্ট থেকে ডোমার থানা পুলিশের সহযোগিতায় রোববার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। মোবাশ্বের নায়েকপাড়ার আলম হোসেনের ছেলে।

এ ঘটনায় মোবাশ্বের নিখোঁজ হওয়ায় সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে সিয়াম আহম্মেদ মিঠু (১৬) নামে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। মিঠু একি গ্রামে আশিকুর রহমান স্বপনের ছেলে এবং ভাউলাগঞ্জ হাজী আজহার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ মে বাড়ী থেকে নিখোঁজ হয় মোবাশ্বের। এলাকায় এবং আশপাশের বিভিন্ন স্থানে খোজাঁখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।

পরে সন্দেহজনক হওয়ায় কিশোর মিঠুকে দেবীগঞ্জ থানায় আসামি করে এজাহার দাখিল করা হয়। এরপর আসামি মিঠুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার তথ্য অনুযায়ী রোববার সকালে সব্দিগঞ্জ ফরেস্ট থেকে মোবাশ্বেরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রত্যক্ষ দর্শী জানায়, মিঠু শুক্রবার দুপুরে সাইকেলে চড়িয়ে পার্শ্বতী নীলফামারীর ডোমার থানার ভোগডাবুড়িতে ফুপুর বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে ডাঙ্গাপাড়ায় বনবিভাগের একটি বেত বাগানে মোবাশ্বেকে গলাকেটে হত্যার করে।

শিকার উক্তিতে মিঠু বলে, মোবাইল ফোন কেনার ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করতেই প্রতিবেশী শিশু মোবাশ্বেকে অপহরণ করে। উদ্দেশ্য ছিলো প্রতিবেশীর ওই শিশুকে অপহরণ করে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে মোবাইল ফোন কেনা।

ওই বেতবাগানে নিয়ে যাওয়ার পর শিশুটি গলা টিপে অজ্ঞান করে মুক্তিপণের জন্য ফোন দেয়ার কথা ভাবছিল সে। এ সময় অবস্থা তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু শিশুটি বেঁচে থাকলে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে পাশের এক বাড়ি থেকে দা এনে গলা কেটে হত্যা করে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে মিঠু।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) শাহ আলম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হাসান সরকার জানান, এ ঘটনায় প্রথমে একটি অপহরণ মামলা নেওয়া হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মোবাশ্বেরকে গলাকেটে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে মিঠু। পরবর্তীতে এটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।