লক্ষ্মীপুর অপরিচ্ছন্ন করোনা ওয়ার্ড, কুকুর আসা-যাওয়া করছে

মোঃ হৃদয় হোসেন, রায়পুর প্রতিনিধি :

করোনাভাইরাস সংক্রামণে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। আক্রান্ত এসব রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালগুলোতে খোলা হয়েছে করোনা ওয়ার্ড।

এর ধারাবাহিকতায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালেও আক্রান্ত রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলা হলেও তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরিত্যক্ত ভবনে বানানো এই ওয়ার্ডের ভিতরে ও বাইরে দেখা গেছে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ।

এমনকি ভেতরে কুকুর আসা-যাওয়া করছে অনায়াসেই। এতে করে করোনারোগীর সুস্থ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ, আর সেখান থেকে কুকুরের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত একটি ভবনে রঙের প্রলেপ দিয়ে ঢিলেঢালাভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে করোনাওয়ার্ডের। ভবনটিতে কোন নিরাপত্তাকর্মী নেই, এমনকি এর কেচি গেইটটিও ভাঙা।

করোনারোগীদের উচ্ছিষ্ট খাবার পড়ে থাকে সিঁড়ির নিচে এবং বারান্দায়। সেগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সেগুলো খেতে কেচি গেইট দিয়ে কুকুরও ভেতরে প্রবেশ করে অনায়াসেই।

এমনটা প্রায়ই হচ্ছে বলেও অভিযোগ করলেন এলাকার কয়েকজন। এতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিত্যক্ত খাবার থেকে কুকুরের শরীরে করোনা বহনের আশঙ্কা করছেন তারা। স্থানীয়রা বলছেন, এসব কুকুর সেখান থেকে খাবার খেয়ে পাড়া-মহল্লায় যাবে, সেখানেও করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় হাসপাতাল এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। আমিনুর রহমান নামে একজন বলেন, সবখানে শুনেছি করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওয়ার্ড রাখতে হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।

অথচ এখানে তার উল্টো। ময়লা আবর্জায় ওয়ার্ডের ভিতরে ও বাইরে একাকার। রাতের বেলায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য বারান্দাতেই খাবার রেখে যায় হাসপাতালের লোকজন।

রোগীরা খাবার নিতে দেরি হলে অনেক সময় কুকুর ওইসব খাবার খেয়ে নেয়। আবার তাদের পরিত্যক্ত খাবার কুকুর খেয়ে জনম্মুখে বিচরণ করে।

এতে কুকুরের সংস্পর্শে হাসপাতাল এলাকায় যাতায়াতরত অন্যরাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজর নেই।

এ ব্যাপারে করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে করোনা ওয়ার্ডের পরিষ্কার করা হয়। তবে কেচি গেইট ভাঙার কারণে কুকুর ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

ওয়ার্ডটি পরিত্যক্ত ভবনে করা হয়েছে। কেচি গেইটটি ভাঙা, তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে গণপূর্ত বিভাগকে গেইটসহ সবকিছু ঠিক করতে বলা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে বলেও জানান।