বাহুবলে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে কাউন্টার মামলা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় পূর্বজয়পুর গ্রামের সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় ও তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা করার পর তার মা ৭জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন এর জের ধরে ষড়যন্ত্র করে মামলার বিবাদী থানায় একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করে ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ইং তারিখে বিকালে মোছাঃ নাছিমা খাতুনের নেতৃত্বে একদল দাঙ্গাবাজরা সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয়ের পরিবারের উপর হামলা করে ।

দাঙ্গাবাজ মোঃ জমির উদ্দিন লোহার রড দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয়ের বাবা মোঃ আব্দুল জাহিরকে বারি মেরে আঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গাবাজরা লীলা ফুলা ও জখম করে । মোঃ আব্দুল জাহিরকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা ফিকল দিয়ে তাকে আঘাত করে।

এ সময় মোঃ আব্দুল জাহির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় ও জীবন মিয়া গিয়ে গেলে দাঙ্গাবাজ সালা উদ্দিন, মহিব উদ্দিন ও গনি মিয়া তাদেরকে মারধর করে আহত করে । তাদের চিৎকার শুনে এলাকার কিছু লোক এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে তাদেরকে বাহুবল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আহত অবস্থা বেশি হওয়ায় হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাদী মোছাঃ দিলারা খাতুন জানান , এ ঘটনার আমি বাদী হয়ে ৭ জনকে অভিযোক্ত করে বাহুবল মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করতে যাই কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে যায় । পরে আমি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে ৭জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছি । উক্ত তারিখে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি এফ আই আর ভুক্ত করেন । পরে উক্ত মামলার আসামী গণ মামলার ২ দিন পরে আমি সহ আমার পরিবারের বিরুদ্ধে বাহুবল মডেল থানায় একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করে ।

সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় জানান: আমি পেশাগত একজন সাংবাদিক ও ছাত্র । আমাকে মিথ্যা ভাবে হয়রানি করানোর জন্য আসামিগণ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বাহুবল মডেল থানায় একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করছে । উক্ত কাউন্টার মামলার জন্য আমি সহ আমার পরিবার ভুক্তভোগী ।

স্থানীয়রা জানান, সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয়ের পরিবারের উপর মিথ্যা ভাবে হয়রানির করার জন্য কাউন্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে । এই কাউন্টার মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ।

সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয়কে তার বাড়িতে এসে সন্ত্রাসীরা হামলা করে গুরুত্ব আহত করেছিল । সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজরা এই গ্রামের নয়, দাঙ্গাবাজরা রঘুরামপুর গ্রাম থেকে এসে তাদের উপর হামলা করেছে ।

এছাড়া সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় ও তার পরিবার জুলাই মাসে ২২ দিন জেলহাজতে থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে আসেন । এরই ফাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অদৃশ্য কারণে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় ও তার পরিবার সহ অভিযুক্ত দেখিয়ে ৩১ আগস্ট ২০২০ইং চার্জশীট দাখিল করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

উক্ত চার্জশীটের ১ নং সাক্ষী ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম দুলাল (৪৫) জানান, আমি এই মামলার সম্পর্কে কিছুই জানি না । আমাকে না বলে মিথ্যা ভাবে এই মামলায় সাক্ষী দেওয়া হয়েছে । আমি শুধু জানি আব্দুল জাহির সহ তার পরিবারকে রঘুরামপুর গ্রামের লোক জন এসে মারধর করেছে ।

কাউন্টার মামলার চার্জশীটের ৩ নং সাক্ষী জুয়েল মিয়া (২৯) জানান, আমি এই মারামারি সম্পর্কে কিছুই জানি না । এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে মিথ্যা ভাবে সাক্ষী দিয়েছে । আমার বাড়ি বিহারীপুর গ্রাম। যখন মারামারি হয়েছে তখন আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না ।

স্থানীয়রা আরো বলেন, এই মামলার যে ধরে বাহুবল তাতীঁলীগের আহ্বায়ক রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ এই মামলার জের ধরে এলাকার অনেক অসহায় মানুষকে পুলিশ মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে । যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই সেলিম জানান, মারামারি সময় আমি ছিলাম না । চার্জশিট দিছি এতে সাক্ষী মামলার বিষয়ে জানা না থাকলে তাদের আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

এব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আপনি কি তদন্ত বিষয়ে এ জন্য প্রশ্ন করতে পারেন। এটা তো আদালতের বিষয় । আপনি এর জন্য প্রশ্ন করছেন কেন । চার্জশিট চলে গেছে মামলা বিচারাধীন প্রশ্ন করা যায় না । এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না । এটা আদালতের বিষয় এতে আমার কোনো বক্তব্য নেই ।

এমন ষড়যন্ত্র মূলক মামলা হওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম হৃদয় ও তার পরিবার ।