ব্রিটিশ মুদ্রা প্রতারণা চক্রের সদস্য আটক

৩ জুলাই শনিবার রাত ১১টায় বগুড়া সদর উপজেলার শাপলা সুপার মার্কেট থেকে নকল বিট্রিশ মুদ্রা তৈরির দায়ে এক প্রতারককে আটক করা হয়েছে। নকল মুদ্রা তৈরি করে ব্রিটিশ আমলের মুদ্রা বলে বিক্রি করার দায়ে বগুড়ায় শাহীন ইমরান আলী (৫০) নামে প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৫টি পুরনো ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা, মুদ্রা তৈরির ছাঁচ, মোবাইল ও ৩০ হাজার ৩শ’ টাকা জব্দ করা হয়। আটক শাহীন বগুড়া সদর উপজেলার বিহারী কলোনি (লতিফপুর) এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত আব্দুস সাত্তার।

 

জানা যায়, পুরান ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা বা কয়েন সংগ্রহ ও নকল মুদ্রা তৈরি করে বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করে আসছিল একটি চক্র। প্রতারকরা অপপ্রচার চালিয়ে বলতেন, ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ব্র্রিটিশ আমলের এ মুদ্রা বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমানা পিলারের নিচে পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মার্কেটে এ মুদ্রার মূল্য কোটি কোটি টাকা। আমেরিকার নাসা এ মুদ্রার প্রধান ক্রেতা।’

 

এমন অপপ্রচারে তাদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। বিষয়টি বগুড়া র‌্যাব ক্যাম্পের গোয়েন্দা দলের নজরে আসে। তারা ধাতব মুদ্রা প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। অবশেষে র‌্যাবের অভিযানে আটক হয় প্রতারক চক্রের শাহীন ইমরান আলী (৫০) নামের ওই সদস্য। বগুড়া র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (লেফটেন্যান্ট কমান্ডার) আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

র‌্যাব জানায়, শাহীন ইমরান আলী কমমূল্যে ভাংগাড়ির দোকানসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মুদ্রা সংগ্রহ করতেন। পরে মুদ্রাগুলো কেমিক্যাল দিয়ে বিভিন্ন ছাপ দিয়ে শুকানোর জন্য রোদে রাখতেন। পরে এগুলো আগুনে পুড়িয়ে এসিডে নিমজ্জিত রেখে ধাতব মুদ্রা তৈরি করতেন। আর তৈরি করা এ ধাতব মুদ্রাগুলো নানা অপপ্রচার চালিয়ে বিক্রি করতেন লাখ লাখ টাকায়।

র‌্যাব আরো জানায়, প্রতারক চক্রের সদস্যরা অপপ্রচার চালিয়ে বলতো, ‘এ মুদ্রা জাহাজে রাখা হলে জাহাজ পানিতে ডুবে না, এটি দিয়ে বিমানকে নামিয়ে আনা যায় ও এ মুদ্রা যত বেশি পানিতে ভেসে থাকবে এর তত দাম বেশি হবে। এসব নাসার স্যাটালাইট তৈরির কাজে লাগে।’- এসব শুনে বগুড়াসহ দেশের অনেক মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। এমনকি মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে টাকা ফিরে পাওয়ায় জন্য একপর্যায়ে এ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শাহীন দীর্ঘদিন ধরে ধাতব মুদ্রা তৈরি করেন। পরে প্রতারক চক্রের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে এসব মুদ্রা বিক্রি করতেন। শাহীন তার নিজ এলাকায় প্রতারক বলে পরিচিত। তাকে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এএমএসএইচ