বাল্কহেডের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত জয়পাড়া সেতু

মাকসুমুল মুকিম, দোহার-নবাবগন্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি :

ঢাকা দোহার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়া বাজারসংলগ্ন ৯০মিটার দীর্ঘ ব্রীজটির ভেঙ্গে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। নিয়মিতভাবে বালুবাহী বাল্কহেডের ঘর্ষণ ও ধাক্কায় ভেঙে গেছে ব্রীজের পিলারের উপরের অংশ। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে সেতু দিয়ে চলাচলকারী বাজারের এবং আশপাশের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জনসাধারণ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হিলসামারি নদী খ্যাত জয়পাড়া খাল দিয়ে প্রতিদিন বালু পরিবহনকারী কয়েকটি বাল্কহেড দিনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ বার ব্রীজের নিচ দিয়ে যাতায়াত করে।বর্ষা মৌসুমে পানিতে তীব্র স্রোত থাকায় যাতায়াতের সময় নিয়মিত ব্রীজের পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে মাঝের পিলারের উপরের সংযোগস্থানে বড় রকমের ফাটল ও আস্তর খসে পড়ার জন্য ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

ব্রীজটি সংরক্ষণেরের স্বার্থে এর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে । অপরদিকে এ সেতুর নিচ দিয়ে প্রতিনিয়ত ই বালুবাহী, পণ্যবাহী, পিকনিকের ট্রলার যাতায়াত করছে। আর বালুবাহী বাল্কহেড গুলো আকারে বড় হওয়ায় ও তীব্র স্রোত ও গতির জন্য সবসময় ধাক্কা এবং ঘষা দিয়েই যাচ্ছে । এতে মাঝের পিলারসহ আশেপাশের প্রতিটি পিলারে কয়েক টি স্থানে ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেখা যায়।

এই ঘটনায় এলাকাবাসীও তেমন কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। কারণ বাল্কহেড মালিক ও বালু বিক্রেতারা প্রভাবশালী। তারা বলেন যে প্রশাসন সব জানে। জয়পাড়া বাজার ব্যবসায়ী আহসান সুমন বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৫ থেকে ২০ বার এ নৌ – পথটি ব্যবহার করে বালু বহনকারী বাল্কহেড যাতায়াত করে থাকে যার ফলে বাজারের এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। সেতুর নিচে স্বল্পস্থান দিয়ে যাওয়ার সময় প্রায়ই আটকে যায় বাল্কহেড। সেতুতে নিয়মিত ই ঘষা লাগে। ভেঙ্গে পড়ার আশংকা দিয়েছে ব্রীজটি। আর আমদের বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থাও নাই। সেতুটি ইতঃপূর্বে সংস্কার করা হলেও এখন প্রয়োজন নতুন আরেকটি প্রশস্ত সেতু নির্মাণের। একইসাথে, নতুন করে সেতুটি সংস্কারের দ্রুত দাবি জানাচ্ছি। আর বাল্কহেড চলাচল অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।

সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার আগেই ভেঙ্গে যাওয়া পিলার ও ফাটল মেরামতের দাবি জানিয়েছেন জয়পাড়া পূর্ব বাজার ও জয়পাড়া বাজার বহুমুখী সমিতির ব্যবসায়ীরা।

জয়পাড়া বাজার বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার মাঝি বলেন, জয়পাড়া বাজার বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার মাঝি বলেন, এ বিষয়ের কেউ আমাদের কিছু জানায়নি বা আমরা জানি না।এমন কোন কিছু হলে আমরা উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয় টা জানাবো। যাতে তারা এই ব্রিজটা মেরামত করে দেয়।

বাল্কহেড মালিক মায়মুনা এণ্টারপ্রাইজের জহিরুল বলেন, আমরা অনুমতি নিয়েছি। কিভাবে নিয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, অন্যরা যেভাবে নেয়, আমরাও সেভাবে নিয়েছি। আমরা মাটি কেটে আনিনা আমরা মাটি কিনে আনি তারপর বিক্রি করি। আর এর থেকে বেশি কিছু জানতে চাইলে আমাদের যে সভাপতি আছে বশির আহাম্মেদ ভাই তার সাথে কথা বলেন।

বাল্কহেড ব্যবসাইয়ের সভাপতি বশির আহাম্মেদের কাছে অনুমতির বিষয় জানতে চাই তিনি জানান, আমরা অনুমতি নেইনি,বাল্কহেড ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়ার কারনে ধাক্কা লাগছে এমন কোন কিছু ঘটনা আমরা জানি না বা শুননিও নাই। বাল্কহেডের ধাক্কায় ব্রিজের রড বেরিয়ে গিয়েছে সে বিষয় আমি দেখবো এমন কিছু হলে আমরা বাল্কহেড চালানো বন্ধ করে দিব।

ঐ স্থানে আরেক জন বাল্কহেড ব্যবসাই মাহবুবুর রহমান রেগে বলেন, কোন বাল্কহেড অবৈধ না সব বাল্কহেড বৈধ। তাই আমরা বৈধ ভাবেই বাল্কহেড চালাচ্ছি।

দোহার পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার মশিউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি রেগেগিয়ে বলেন, আপনারা কি আমাকে ছুটির দিনেও ছুটি নিয়ে থাকতে দিবেন না খালি ঝামেলা করেন। কেন আপনাদের শুক্রবারই তথ্য জানতে হয় অন্য দিন কি করেন? এরপর তিনি বলেন,আমরা ব্রিজের রড বেরিয়ে গিয়েছে সে বিষয় টা শুনেছি কিন্তু বাল্কহেড তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করিনা। এটা নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ আপনারা পুলিশকে জিজ্ঞেস করেন আমাদের কেন জিজ্ঞেস করেন।

এবিষয়ে দোহার উপজেলায় সহকারী কমিশনার ভূমি ফজলে রাব্বি কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাটি কেটে এনে বিক্রি করছে এবং বাল্কহেড এর ধাক্কায় জয়পাড়া সেতুর সমস্যা হচ্ছে এ বিষয় আমরা কিছু জানি না। তাই আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখবো এবং তারপর আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।

আরো পড়ুন : শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায়

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : পাইলস রোগে করণীয়

আরো পড়ুন : জেনে নিন দীর্ঘক্ষণ মিলনের ঔষধ

আরো পড়ুন : একজিমা হলে কী করবেন?