ইয়াবার গডফাদার টেকনাফের ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান বরখাস্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

মাদক মামলায় আদালতে চার্জ গঠন হওয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

শাহজাহান মিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত একজন ইয়াবার গডফাদার। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।

গত ৭ জুন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান টেকনাফের ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম।

শাহজাহান মিয়া ছাড়াও তার বাবা টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম এবং ভাই দিদার মিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবার গডফাদার।

গত ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে অনুষ্ঠিত প্রথম দফায় ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে দিদার মিয়া আত্মসমর্পণ করলেও তাদের বাবা জাফর আলম পলাতক রয়েছে।

টেকনাফের ইউএনও সাইফুল বলেন, মাদক মামলার আসামি টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন হওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগের পাঠানো সাময়িক বরখাস্তের একটি চিঠি গত ৭ জুন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো হয়েছে। এর একটি অনুলিপি উপজেলা প্রশাসনের কাছেও পৌঁছেছে।

গত ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই টেকনাফ থানায় দায়ের করা ফৌজদারি মামলা নম্বর ৯৩ ও ৯৪ এর অভিযোগপত্র পুলিশ ৩ মাস পর আদালতে দাখিল করে। সম্প্রতি আদালত ওই দুটি মামলার চার্জ গঠন করেছে।

মামলায় অভিযুক্ত প্রমাণিত হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তার ক্ষমতা প্রয়োগ সমীচীন মনে না করায় সরকার তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বলে জানান ইউএনও।

পুলিশ জানিয়েছে, টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া একজন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত একজন ইয়াবার গডফাদার।

পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানের মুখে শাহজাহান মিয়া ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

গত ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই যশোর সীমান্তের বেনাপোল পয়েন্ট দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ শাহজাহান মিয়াকে গ্রেফতার করে।

দু’দিন পর তাকে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিলে তার বাড়িতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়।

এতে পুলিশ শাহজাহান মিয়ার বাড়ি থেকে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় পুলিশ ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই রাতে মাদক ও অস্ত্র আইনে শাহজাহান মিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।