৪ ইউপি চেয়ারম্যানের কলরেকর্ড ফাঁসের অভিযোগ

পাবনার আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে উৎকোচের বিনিময়ে চার ইউপি চেয়ারম্যানের গোপন কলরেকর্ড লিস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।

মামলা কিংবা আদালতের নির্দেশনা ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পৌর মেয়রের নির্দেশে ওসি এটা করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

অবশ্য ওসি স্বীকার করেন কল রেকর্ড লিস্টের একটা সিডি দিয়েছেন। তবে সংসদ সদস্যের দাবি, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বিরুদ্ধে বলছে তারা। ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে জেলা পুলিশ।

গত ১৩ এপ্রিল বেড়া উপজেলার বাঁধের হাট থেকে ২২৯ বস্তা ত্রাণের চালসহ র‌্যাবের হাতে আটক হন ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার।

কালোবাজারে বিক্রির জন্যই ওই চাল মজুত করা হয়েছিল বলে র‌্যাব জানায়। তবে কোরবান সরদারকে নির্দোষ দাবি করে তার পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর ও বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন।

পরদিন আব্দুল বাতেনকে দল থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। মামলা কিংবা আদালতের আদেশ ছাড়াই ২৯ মে আমিনপুর থানার ওসি, চার চেয়ারম্যানের তিন মাসের কল রেকর্ড লিস্ট সংগ্রহ করে তা সংসদ সদস্য ও পৌর মেয়রকে দিলে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

পাবনা জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু বলেন, এই কাজটি করে ওসি সাহেব আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।

পাবনা মাসুমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন বলেন, প্রশাসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, তদন্তের মাধ্যমে এর একটি সুষ্ঠ বিচার করে আমাদেরকে জনগণের সেবার করার সুযোগ দেয়া হোক।

থানার ওসি স্বীকার করেন তাদের কল রেকর্ড লিস্টের একটা সিডি দিয়েছেন সংসদ সদস্যকে।

পাবনা আমিনপুর থানার ওসি মাইনুদ্দিন বলেন, এমপি সাহেব আমাকে বলেছেন, যে আপনি আমাকে একটু সহযোগিতা করেন। একটা সিডি আছে সেটা আমাকে একটু সংগ্রহ করে দিয়েন। তো আমরা সিডিটা এমপিকে দিয়েছি।

তবে সংসদ সদস্যের দাবি, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বিরুদ্ধে বলছে তারা।

পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, বড় দল, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, প্রতিযোগিতা আছেই। সে ক্ষেত্রে কিছু অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। তার অংশ এটা।

এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা পুলিশ।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন তাদের ডেকে কথা বলব। এবং যাদের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিষয়েও তদন্ত করব।

ত্রাণ চুরির অভিযোগে দায়ের করা র‌্যাবের মামলায় অর্থের বিনিময়ে ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে তড়িঘড়ি করে ওসি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যানরা।