উভয় সঙ্কটে মানুষ!

২২ জুলাই ২০২০ খ্রিস্টাব্দ : বুধবার

 

সম্পাদকীয়

বর্তমানে পৃথিবীর মানুষ সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের মানুষ উভয় সঙ্গে রয়েছে। একদিকে করোনা মহামারীতে আতঙ্কিত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং অন্যদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্দী হয়ে আছে দেশের হাজারো মানুষ। যেন ‘মরার উপর খড়ার ঘা।’ করোনাকালে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু পূরণ করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তার উপর পানিবন্দী মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেশের জন্যে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

এ সময় আমাদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। ধীর স্থির হয়ে এই সঙ্কটময় মুহূর্ত মোকাবেলা করতে হবে। যদিও করোনাকালে মানুষের জীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এটা আমাদের বুঝতে হবে যে, প্রতিটি মানুষেরই একই অবস্থা। তবুও এটা প্রশংসার দাবি যে, মানুষ মানুষের পাশে রয়েছে। মানুষ মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। যে যার সাধ্য অনুযায়ী মানুষ মানুষকে সহযোগিতা করছে।

তবে গত ১৮ জুলাই সময় সংবাদের মাধ্যমে জানা গেছে যে, শেরপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানির বৃদ্ধি পেয়ে সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। এর ফলে সেখানকার মানুষের দু:খ দুর্দশা বেড়ে গেছে। কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও পানি বৃদ্ধির কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, সেখানকার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ পানিবন্দী থাকায় তারা অত্যন্ত দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। আরো জানা গেছে, বন্যা কবলিত এলাকার পাটের আবাদ ও আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে সবজীর আবাদ। সেখানকার মানুষজন বাঁধের উপর ও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আবার দূরের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও চলে গেছে।

একদিকে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে; অন্যদিকে পানির কারণে মানুষজন চাষাবাদ করতে পারছে না। সেই হিসেবে খাদ্যসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে আবাদী জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, তাতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে। বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দামও বেড়ে যেতে পারে।

এই করোনা মহামারীকালে যারা পানিবন্দী আছে, এসময় দেশের বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসা উচিত। অন্তত এই অবস্থায় তারা যেন দু’বেলা খাবার পেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা দরকার। বন্যা পরবর্তী তাদের জন্যে আলাদাভাবে চিন্তা করা দরকার। বিশেষ করে চাষাবাদের বিষয়ে, যেন কৃষকরা নতুনভাবে ফসল ফলাতে পারে। আবার তারা কৃষিতে নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকতে পারে। যদিও মানুষ এখন উভয় সঙ্কটে দিন পার করছে, তবুও আমরা আশা করি, সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষজন সহযোগিতা পাবে।