টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখে ৫৮ লাখ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত গৃহবধূ

নিউজ ডেস্ক :

মহাতান্ত্রিক গুরু সব রোগ সারাতে পারে, টিভিতে এমন বিজ্ঞাপন দেখে টাকা ও স্বর্ণালংকার খুইয়ে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি মাদারীপুরে বেশ কয়েকজন লাখ লাখ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এই চক্রের দুজনকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ বলছে, চট্টগ্রাম থেকে নিয়ন্ত্রিত এ চক্রে ১৮ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছে।

মহাতান্ত্রিক গুরুর কাছ থেকে মাদুলি সংগ্রহ করে হাতে কিংবা কোমরে দিলে যে কোনো ভয়াবহ রোগ থেকে মুক্তি মিলবে। গত ২৩ জুন টেলিভিশনের স্ক্রিনে বিজ্ঞাপন দেখানো নম্বরে কল করেন মাদারীপুরের এক গৃহিণী। শরীরের এলার্জী চিরতরে মুক্তির আশায় প্রথমে ৩২০ টাকা বিকাশে দিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রহণ করেন একটি মাদুলি।

পরে তাকে ভয় দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে তার কাছ থেকে বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে আদায় করা হয় ৫৮ লাখ টাকা। পুত্রবধূ ও মেয়ের ৩৫ ভরি স্বর্ণালংকার বিক্রি এবং ধারদেনা করে এ টাকা দিয়ে নিঃস্ব হয়ে বিচারের আশায় সদর মডেল থানায় মামলা করেন তিনি।

শুধু এই গৃহিণী নন, তার মতো অনেকেই টিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন দেখে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় আটকা পড়েন প্রতারণার ফাঁদে। সদর উপজেলার কালিকাপুর, চরমুগরিয়া, কুমারখালী এলাকার বেশ কয়েকজন প্রতারিতও হয়েছেন। তবে প্রতারণার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা লোকলজ্জার ভয়ে মামলা বা অভিযোগ দিতে চান না। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বলেন, কম্পিউটার দিয়ে মানুষের চেহারা পরিবর্তন করে গুরুজি বা জীনের বাদশা বানিয়ে দেয়া হয় চটকদার বিজ্ঞাপন। গত ৯ আগস্ট এ ঘটনায় মামলার করেন এক ভুক্তভোগী। পরে অভিযান চালিয়ে গত ২৬ আগস্ট ৪ লাখ টাকাসহ এ চক্রের দুই সদস্যকে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলহোতা হাকিম চৌধুরীসহ বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।

গ্রেফতার করা প্রতারক চক্রের সদস্যদের চট্টগ্রামের রাউজানের পথেরহাট আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ৬০ লাখ টাকার অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার দুজন জসিম উদ্দিন ও আবদুর রহমান আমান প্রতারণার কথা স্বীকার গত ২৭ আগস্ট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।