ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ আবশ্যক

সম্পাদকীয় …

পদ্মা কন্যা ভাঙ্গনে ব্যস্ত। আর পদ্মার ভাঙ্গনে একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আমরা অতীতেও এমন ঘটনার কথা শুনেছি। বাংলাদেশের নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের ভাঙ্গনে কোটি কোটি টাকার সম্পদ নদীতে তলিয়ে গেছে মুহূর্তের মধ্যে। এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা রাতে দেখেছে নিজের ঘরবাড়ি, আর সকালে তাদের সবকিছু নদীতে তলিয়ে গেছে। সেসব দু:খী মানুষগুলো বাধ্য হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে, কেউ কেউ দূরে চলে গেছে। এতে করে সেসব পরিবার দারিদ্রতার মধ্যে দিনযাপন করছে। তাদের পরবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘পদ্মার ভাঙ্গনে আক্রান্ত শিবচরের চরাঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন’ শিরোনামে সংবাদটির মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি নদীর ভয়াবহন ভাঙ্গনের সংবাদ। পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে আক্রান্ত হলো শিবচরের চরাঞ্চলের একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনটি নদী ভাঙ্গন আক্রান্ত হয়েছিলো মাত্র দুইদিন আগে।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, ‘২০১২ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি থেকে কয়েক বছর আগেও নদী ছিল প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে।’ পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকটিও ২৪ ঘন্টার মধ্যে নদীতে তলিয়ে যায়। তাছাড়া সেখানকার বাজারের অর্ধ শতাধিক দোকানপাটসহ বিস্তীর্ণ জনপদ ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে নদীতে। ফলে সেই স্কুলগুলোতে পড়–য়া ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ ধ্বংস হওয়ার পথে।

আমরা দাবি করতেই পারি যে, পদ্মার ভাঙ্গন থেকে সেসব এলাকার মানুষজনকে রক্ষার জন্যে সরকার এগিয়ে আসবে এবং স্থায়ী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে সেসব পদ্মা তীরবর্তী মানুষকে রক্ষার জন্যে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। তাহলে পদ্মা তীরবর্তী মানুষজন নিজেদের রক্ষা করতে পারবে এবং বেঁচে যাবে হাজার হাজার মানুষের জীবন ও পরিবার। সেই সাথে দেশের সম্পদ সুরক্ষিত থাকবে বলে আমরা বিশ^াস করি। অন্যথায় পদ্মা যেভাবে গ্রাস করে নিচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো লক্ষ্য টাকা মূল্যের সম্পদ; এভাবে চলতে থাকলে আমরা হাজার হাজার একর চাষের জমি হারিয়ে ফেলবো এবং সেসব নদীরবর্তী মানুষজন অসহায় হয়ে পড়বে। দারিদ্রতা তাদেরকে গ্রাস করবে ও দেশে দারিদ্রতা বেড়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। সুতরাং ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ জরুরীভিত্তিকে শুরু করা দরকার।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ১১ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৮ সফর ১৪৪২ হিজরি, শনিবার