ফজরের নামাজ পড়তে উঠে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করলেন মাদরাসা শিক্ষক!

সম্পাদকীয় …

শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থীরা সম্মানের চোখে দেখবে এটাই স্বাভাবিক। কেননা তাদের কাছ থেকেই তারা সভ্যতা শিখে, নম্রতা শিখে, ভদ্রতা শিখে; কীভাবে জীবনে চলতে হবে সেটা তারা শিক্ষকের কাছ থেকেই শিখে থাকে। সুতরাং সেদিকটি চিন্তা করলে শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বাসে তাদের কাছে আসে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো শিক্ষক যদি কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি যৌন লালসা চরিতার্থ করে তাহলে বিশ্বাস ও সম্মানের জায়গাটা নষ্ট হয়ে যায়। তাও যদি হয় একজন মাদ্রাসা শিক্ষক, তাহলে সেখানে নৈতিকতার স্খলন ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। সুতরাং শিক্ষার্থীদের সত্যিকারে নিরাপত্তা কোথায় রইলো? মেয়েরা আর কীভাবে সতর্ক থাকলে নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে পারবে? এ ধরনের জঘন্য ঘটনা কোনোভাবেই সমাজ মেনে নিতে পারে না। ধিক! সেই মাদ্রাসা শিক্ষককে।

তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুরে। প্রিয় সময়ে ‘ ফজরের নামাজ পড়তে উঠে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করলেন মাদরাসা শিক্ষক!’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি একজন শিক্ষকের ঘৃণিত কর্মকা-ের বিষয়ে! তার এই অপকর্মের জন্যে সেই এলাকায় নিশ্চয় ‘ছি! ছি! ছি!’ ধ্বনিত হচ্ছে চারিদিকে। প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবি সকলের মধ্যে স্পষ্ট।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, কুষ্টিয়ার মিরপুরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল কাদেরকে আটক করেছে পুলিশ। এই অভিযুক্ত ব্যক্তিটি ‘কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের স্বরূপদহ চকপাড়া এলাকার সিরাজুল উলুম মরিয়ম নেসা মাদরাসার সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নির্যাতিতা ওই মাদরাসার একজন আবাসিক ছাত্রী। সেই ছাত্রী সপ্তাহের ৬ দিন ওই মাদরাসায় থাকে। প্রতি শুক্রবার সকালে তার বাবা তাকে বাড়ি নিয়ে যান, আবার শনিবার সকালে পৌঁছে দেন মাদরাসায়। এভাবেই চলছিলো মেয়েটির মাদ্রাসার জীবন। একদিন শনিবার সকালে মেয়েটির বাবা তাকে মাদরাসায় পৌঁছে দেন। পরদিন ভোরে ফজরের নামাজের সময় মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল কাদের মেয়েটিকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।’ এভাবেই মেয়েটির জীবনে কালিমা লেপন করেন সেই মাদ্রাসা শিক্ষক। শুধু তাই নয়, তিনি বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্যে মেয়েটিকে ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে শাসিয়েও দেন। কিন্তু মেয়েটি পরেরদিন সকালে তার এক সহপাঠিকে বিষয়টি জানায়। ওই সহপাঠি ঘটনাটি নিজের বাবাকে জানালে তা এলাকায় জানাজানি হয়। পরে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। এলাকার লোকজন এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও ওই মাদরাসার শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানান। তাদের সাথে শিক্ষার্থীরাও দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

আমাদের কথা হলো, মাদ্রাসার মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কর্মকা- মোটেও আশা করা যায় না। এতে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুণœ হয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে মাদ্রাসায় আশা বন্ধ হয়ে যাবে শিক্ষার্থীদের। আমরা মনে করি, এই হীন কাজের জন্যে সেই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা উচিত। যেহেতু ঘটনাটি সত্য সেহেতু তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। তাহলে অন্যরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস করবে না।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, পাঠকের আস্থাই আমাদের মূলধন

১৪ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২৯ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৬ সফর ১৪৪২ হিজরি, বুধবার