এবার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের শিকার

সম্পাদকীয় …

কিশোর অপরাধ অনেক সময় আমাদের কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। কিন্তু যদি সেটা হয়ে যায় অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা তাহলে সেটাকে মোটেও মেনে নেয়া যায় না। কিশোর কর্তৃক কিশোরী ধর্ষণ অথবা ধর্ষণে সহযোগিতা করাটা ভয়ঙ্কর বিষয়। সেটাকে আমারা মারাত্মক বলেই মনে করি। তাদের এহেন অপরাধে এটা স্পষ্ট যে কিশোররা উচ্ছন্নে চলে গেছে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার; অথবা তারা ভবিষ্যতের জন্যে ভয়ঙ্কর হিসেবে তৈরি হচ্ছে। আমরা মনে করতেই পারি যে, কিশোর হলেও তারা কিন্তু মোটেও অবুঝ নয়। সুতরাং সেদিকটি চিন্তা করতে কিশোরদের পরিবারকে নৈতিক শিক্ষা অবশ্যই প্রদান করা উচিত। প্রত্যেকটি পরিবার যদি কিশোরদের নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে তাহলে তারা এমন আচরণ করতে পারে না। তাদের দ্বারা সমাজের কোনো ক্ষতি হতে পারে না।

আজকাল মানুষদের বলতে শোনা যায় যে, কিশোর কিশোরীরা বয়স্কদের তেমন একটা সম্মানও করে না। স্কুলে শিক্ষকদের মান্য করে না বা সম্মানের চোখে দেখে না। অপরদিকে পরিবারের দিক থেকেও তারা মা বাবার অবাধ্য হয়ে থাকে। কিন্তু তাদেরকে যদি ভালো শিক্ষা দেয়া যায় তাহলে তারা এভাবে নষ্ট হতে পারে না।

প্রিয় সময়ে ‘কুমিল্লাায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, তিন কিশোর গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি কতোটা দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটে গেলো। সমাজের প্রচলিত ঘটনা অর্থাৎ ধর্ষণের ঘটনাগুলো তারা যখন জানতে পারে, তখন সেসব ঘটনাই তাদেরকে এমন ঘটনা ঘটাতে উৎসাহিত করে। যদি ধর্ষণের মতো ঘটনায় কঠোর শাস্তির বাস্তবায়ন হয়ে যায় তাহলে কিশোররা এ ধরনের অপরাধে জড়াতে পারে না। তাছাড়া সমাজের মধ্যে যে রকম লোমহর্ষক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তাতে আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাই।

ঘটনার বিবরণে আমরা জানতে পেরেছি যে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার বলরামপুরে পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলো তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। পুকুরটি ঐ ছাত্রীর বাড়ির পাশেই ছিলো। সে সময় শিশুটিকে দশ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে একটি সবজি জমির ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করে একই গ্রামের ষোল বছর বয়সী কিশোর। তাকে ধর্ষণে সহায়তা করে সদর দক্ষিণ উপজেলার জয়পুর গ্রামের আরো দুই কিশোর। অর্থাৎ ঘটনার সাথে তিনজনই জড়িত হয়ে যায়। পরে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ধর্ষক এবং তার দুই সহযোগীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে তিন কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এখানে একটা বিষয় পরিস্কার যে, শিশুটিকে দশ টাকার প্রলোভন দেখানো একটি আশ্চর্যের বিষয়। ষোল বছর বয়সীর মাথায় এই দুষ্টু বুদ্ধিটা কাজ করেছে। সুতরাং সেই দিকটি চিন্তা করলে সেই কিশোর বড় উপরাধী বলেই আমরা মনে করি। অপরদিকে তাকে সহযোগতিা করেছে যারা, তারাও নিশ্চয় অবুঝ শিশু ছিলো না। সুতরাং তাদেরও সমভাবে দোষী বললে ভুল হবে না। কিন্তু যেহেতু তাদের বয়স আঠারো বছরের নিচে সুতরাং তারা সরকারি হিসেবে শিশু হিসেবেই গণ্য হয়। সেই আইনের বিষয়টি চিন্তা করে তাদেরকে কিশোর সংশোধনাগারে রেখে সংশোধনের সুযোগ দেয়াটা যুক্তিযুক্ত হবে কিনা সেটাও ভাবা উচিত।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

২৯ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ১৩ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার