বিয়ের প্রলোভনে ফেলে

সম্পাদকীয় …

লোভ মানুষের জীবনকে পতনের দিকে ধাবিত করে। আর প্রলোভনের ফাঁদ যারা পেতে বসে তারাও রক্ষা পায় না অবশেষে। উভয়ই একসময় ধ্বংস হয়। কিন্তু বিশ্বাসের সুযোগে যদি সরল মানুষকে ফাঁদে ফেলতে জাল পাতা হয় তাহলে তা বোঝা বড়ই কষ্টকর। আর সে ধরনের ফাঁদের ষড়যন্ত্রের কথা মানুষ কোনোভাবেই বুঝতে পারে না; বোঝার ক্ষমতাও কারো হয় না।

অপরদিকে মানুষকে বিশ্বাসও করতে হয়। তা না হলে জীবনে চলা যায় না। জীবনে বেঁচে থাকতে হলে কাউকে না কাউকে বিশ্বাস করতেই হবে। একেবারে অবিশ্বাসের মন নিয়ে জীবনে বেঁচে থাকা বড় দায়। একজন ষোল বছরের মেয়ে আবেগের বশে একজনকে বিশ্বাস করতেই পারে। তাই বলে তার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে, সরলতার সুযোগ নিয়ে অবিশ্বস্ততার মতো কাজ করলে সেক্ষেত্রে কিছুই করার থাকে না। অতএব, একজন ষোল বছরের মেয়ের কী করার ছিলো। মানুষের মনের মধ্যে লোভ জড়িয়ে যায় তখন সে দিশেহারা হয়ে যায়।

প্রিয় সময়ে ‘নারায়ণগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি বিয়ের প্রলোভন পেয়ে বসেছিলো একটি মেয়ের মধ্যে। অপরদিকে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিলো নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্যে ছেলেটি।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ‘নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে দুই দফায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত মেহেদী হাসানকে (১৯) যদিও গ্রেফতার করেছে পুলিশ; তবে মেহেদীর সহযোগী জাবেদ মোল্লা (৩০) পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা।’

পরস্পরের মধ্যে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই বিশ^াসের সুযোগ একটি মেয়ের সর্বনাশ করা মোটেও উচিত নয়। কিন্তু সেটাই ঘটেছে মেয়েটির জীবনে। যদিও মেয়েটি সে রকমটি আশা করেনি। তবে একটা কথা আমরা বলতেই পারি যে, এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে একের পর এক ঘটেই চলেছে। তবুও কেনো কিশোর-কিশোরীরা নিজেরা সাবধান হতে চায় না? নিজের জায়গা থেকে সবাই যদি সতর্ক হয়ে যায়, তাহলে এভাবে কেউ সর্বনাশ করতে পারে না। কাউকে এভাবে সহজে বিশ্বাস করা মোটেও উচিত নয়। এ ধরনের ঘটনায় একজন কিশোরের চেয়ে কিশোরীকে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। লজ্জার মৃত্যু হওয়ার পাশপাশি পরিবার ও প্রতিবেশীদের মান সম্মানের হানি হয়। অপর দিকে ছেলেটির পরিবারেরও একই অবস্থা দাঁড়ায়। সুতরাং সেই দিকটি চিন্তা করে নিজের সতর্ককা নিজেকেই করে নেয়া উচিত।

তাছাড়া এ ধরনের ঘটনায় এক শ্রেণীর মানুষ সুবিধা লুটে নেয়ারও চেষ্টা করে। অন্তত সেই সুযোগটি তাদের দেয়া উচিত নয়। কেউ মেয়েটির পক্ষে থেকে অবস্থান করে, অন্যদিকে কেউ ছেলেটির পক্ষে থেকে অবস্থান গ্রহণ করে ঘটনার জটিলতা আরো বাড়িয়ে তুলে। তাতে কখনো কখনো সমাধান হলেও সুষ্ঠু সমাধান আসতে পারে না। কেননা এসব ঘটনা আইনের মাধ্যমেই সমাধান করতে হয়। আমরা চাই, এ ধরনের ঘটনার সুন্দর সমাধান হোক।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

আপডেট সময় : ০৬:৪১ পিএম

১৭ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. ০২ অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০১ রবিউস সানি ১৪৪২ হিজরি, মঙ্গলবার