জায়ফল : ১৭টি রোগের মহৌষধ

হাকীম মিজানুর রহমান :
জয়ফল বা জায়পত্রীর সংস্কৃত নাম জাতিফলম, মালাথিফলম বা জাতীফল। এর ইউনানী পারিভাষিক নাম জৌযবুওয়া এবং আয়ুর্বেদিক নাম : জাতীফল।

ব্যবহৃত অংশ : বীজের শাঁস, বীজের শাঁসের তেল।

যে সমস্ত রোগের ঔষধ : অনিদ্রা, উদরাময়, শ^াসকাশ, ধ্বজভঙ্গ, ব্রণ, মেছতা ও ছুলি, পেট ফাঁপা, পক্ষাঘাত, অর্দিত বা মুখের পক্ষাঘাত, দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা, যৌনশক্তির দুর্বলতা, অতিসার, মুখের দুর্গন্ধ, বমি, হিক্কা, জন্ডিস, মাথার যন্ত্রণায় কার্যকরী।

সংশোধক : শুস্ক ধনিয়া, মধু, গুলে বনফশা।

পাশর্^প্রতিক্রিয়া : মাত্রাতিরিক্ত সেবনে মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, উন্মত্ততা, শ^াসকষ্ট, যকৃতপ্রদাহ দেখা দিতে পারে। উষ্ণ প্রকৃতির লোকদের ক্ষেত্রে পাশর্^ প্রতিক্রিয়া বেশি দেখা দিতে পারে।

ব্যবহার :
এক. বদহজমে (অজীর্ণ) ও দুর্গন্ধযুকত মলদোষ : পানি দিয়ে জায়ফল ঘষে তার সাথে খানিক পানি মিশিয়ে অথবা ১০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ জায়ফল চ‚র্ণ এক কাপ পানিসহ দিনে ২ বার, ৩ থেকে ৪ দিন সেবনে অজীর্ণ ও দুর্গন্ধযুকত মলদোষ দূর হয়।

দুই. মূত্রকৃচ্ছতা (কম প্র¯্রাবে) : ৫ গ্রাম গোক্ষুর বীজ থেঁতো করে রাতে ১ গøাস গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ছেঁকে যে গোক্ষুরজল পাওয়া যায়, তার সাথে ১০০ মিলিগ্রাম জায়ফল চ‚র্ণ করে মিশিয়ে কয়েকদিন খেলে মূত্রকৃচ্ছতায় উপকার মিলে।

তিন. রক্তাতিসার : দীর্ঘদিন পিত্ত বৃদ্ধিকর গুরুপাক খাবার, অ¤øদ্রব্য বা টক জাতীয় খাবার ও রু²খাদ্য গ্রহণের পরিণতিতে সৃষ্ট অতিসার থেকে রক্তাতিসারে পরিণত হলে ছাগীর দুধসহ ২-৩ দিন ১০০-১২৫ মিলিগ্রাম জায়ফল চূর্ণ করে খেতে দেওয়া হয়।

চার. অগ্নিমান্দ্য : পুঁইশাক, ঝিঙ্গে, কুমড়া, লউ, বরবটি, মুগডাল এ ধরনের শীতবীর্য খাদ্য যারা পরিপাক করতে পারেন না, তাদেরকে হালকা গরম পানিসহ ১০০ মিলিগ্রাম জয়ফল চ‚র্ণ খাওয়ালে সেরে যায়।

পাঁচ. বমি ভাব : জায়ফল পানিতে ঘষে ১০-১৫ ফোঁটা আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে খাওয়ালে বিবমিষা ও গা বমিভাব দূর হয়।

ছয়. আধকপালে মাথা ব্যথা : জায়ফল বেটে মাথার তালুতে লাগালে আধকপালে মাথা ব্যথা ও মাথা
ধরার উপশম হয়।

সাত. মেছতা ও ছুলি : জায়ফল পানি দিয়ে ঘষে মলমের মতো লাগালে মেছতা ও ছুলি রোগ সেরে যায়।

আট. হাতে পায়ে খিলধরা : জায়ফলের তেল মালিশ করলে হাতপায়ে খিলধরা বন্ধ হয়। ৫ থেকে ৬ গ্রাম জায়ফল বাটা বা চ‚র্ণ ৫০ গ্রাম সরিষার তেলে ভালোভাবে নেড়ে ব্যবহারে একই ফল পাওয়া যায়।

নয়. ব্রণ : জায়ফল চ‚র্ণ পরিমাণ মতো মধুসহ মেড়ে ব্রণে ও মুখে লাগালে ব্রণ ও মুখের দাগ দূর হয়।

দশ. দন্তরোগ : অল্প আগুনের আঁচে ভাজা জায়ফল চ‚র্ণ সরাসরি বা কোনো দাঁতের মাজনের সঙ্গে পরিমাণ মতো মিশিয়ে দাঁত মাজলে মাঢ়ীফোলা ও দাঁত ব্যথার উপশম হয়।

হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
মুঠোফোন : ০১৭৪২০৫৭৮৫৪।
শ্বেতী রোগ, যৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।
সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

সূত্র : ইউনানী ভেষজ বিজ্ঞান।