রূপগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দু’ নারীসহ ৩ জনের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দু’ নারী শ্রমিকসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কারখানার অপারেটর মোরসালিন হকের (২৪) মৃত্যু হয়। প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে তিনি কারখানার তৃতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন বলে জানা গেছে। এর আগে দু’ নারীর মৃত্যু হয়।
মোরসালিন হকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মোরসালিনকে রাত ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মোরসালিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর সুবেদপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আনিসুর রহমান।’

এর আগে অগ্নিকাণ্ডে স্বপ্না রানী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩) নামে দু’ নারী নিহত হন। নিহতরা হলেন : সিলেট জেলার যতি সরকারের স্ত্রী স্বপ্না রানী ও উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুনবাজার এলাকার হারুন মিয়ার স্ত্রী মিনা আক্তার। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ডেমড়া, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে। রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এএসএম সাহেদ সেসময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। ৭তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচতলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ ছাদ থেকে লাফ দেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই রানী ও মিনা আক্তার নামের দুই নারী নিহত হন। ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক শাহাদাত হোসেনও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত স্বপ্না রানীর মেয়ে শ্রমিক বিশা রানী বলেন, অনেক শ্রমিক কারখানা ভবনের ভেতরে আটকে রয়েছেন। তাদের বের করা না হলে সবাই মারা যাবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আব্দুল আল আরিফিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এএমএসএইচ