ঘোলাটে জলের পিছনে

নুরউদ্দিন তালুকদার :

আমি তোমার বর্ষ্ম থেকে ওষ্ঠ তুলে তাকিয়ে দেখি মুখের দিকে
তুমি আমার কোনো কথাই রাখোনি
কথা ছিল কি এমন করে অবিশ্বাসে পরিণত হয়ে-
আঁখির দুই পাশ মুচড়ে তাকানোর?
কথা ছিল কি গোধূলি সন্ধায় ঘরে না ফিরে মায়ার খেলায়
আদর পেয়ে ফণীর মতো শরীর বাঁকানো?
হিমেল হাওয়ায় এখন নদীর মতো শব্দ ওঠে
তিনটি কথা বলতে এসে তোমার অঝরে
চোখের কোণে দেখতে পেলাম মনোহরণের ক্ষুধাস্পৃহা;
এখন আর আমার দুঃখ হয়না, ক্রোধ হয়না, ঈর্ষা হয়না
এখন তোমার উপাঙ্গ থেকে প্রসূনের গয়না
বহ্নিমিত্রে দাও ছড়িয়ে, কেউ এসে তোমায় রক্ষা করুক।
তুমি ভেঙ্গেছো দুর্যোগ দিনের কঠিন পণ
নিশুতির আলোকশূন্যতার মাঝে করছো লীলাখেলা
নদীর শব্দ ছাড়িয়ে এখন বেজে উঠল শিলাবৃষ্টির ঝড়।
সখী, এবার স্পষ্টে সম্মুখে কথা বলার দিন এসেছে
কয়েকবছর বাঁচব কিনা কেউ জানি না —
আমার কথা উজাড় বন বৃক্ষের ঝরা পাতা পাখির মতো ঝরে পড়ে
চিঠি পেয়েছি হায়ারোগ্লিফিক্স অক্ষরের স্বরান্তরে
বরফ ফেটে অকস্মাৎ বেরিয়ে আসে রহস্যের জলস্তম্ভ
আমি যখন তোমার দেহাংশে মুখ ডুবিয়ে গন্ধ শুঁকি
সতীত্ব হারিয়ে বৃক্ষ তখন আত্মা পায়, গন্ধবহে এসে নিরালম্ব……
কুমারীর মধ্যে আজ নাভিশ্বাস!
বুজবো আজ খুব দেরিতে, আঁধার ঘরে জ্বলে এখন প্রদীপের আলো
রক্ত আমার অবিশ্বাসী, অবিশ্বাসী আমার সমস্ত কিছু
নেশার ঘোরে ছিলাম আমি ভবঘুরে
ক্লান্ত মাথা সরিয়ে এনে চোখ রেখেছি তোমার আপাদমস্তকে
শরীর খুলে অন্যের শরীর, কেন এমন লোভ দেখিয়েছিলে?
আমি আহ্বান করেছিলাম তোমায়, এখন ও সময় আছে…..
আলোর দিশারি পথে চলে এসো
কিন্তু তুমি আমার কোনো কথাই রাখোনি, সেই দুঃখে অভিমানে
শ্বাসকষ্ট হলো আমার, হৃদপিন্ডের ব্যথা রীতিমতো বেড়ে গেল।
চোখের কোণে জল এসেছিল।
চোখ সে তো স্পষ্টই ভালো জানে
আমি নিরর্থক দ্বিধার মধ্যে পরে রইলাম!
ঘোলাটে জলের পিছনে।

লেখক পরিচিতি :

নুরউদ্দিন তালুকদার
অধ্যয়নরত বৃন্দাবন সরকারি কলেজ হবিগঞ্জ

ইতিহাস বিভাগ
ধরমন্ডল, নাসিরনগর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া