দোহারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রিন্টার কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎ

 

মাকসুমুল মুকিম, দোহার প্রতিনিধি :

ঢাকার জেলার দোহার উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মারুফুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে প্রিন্টার কেনার নামে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দোহার উপজেলার প্রায় ৪৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রিন্টার কেনার নামে ১৫ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করেন মারুফুল।

এই টাকায় কমদামী ও নিন্মমানের প্রিন্টার দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে চলতি বছরের ১৬ জুলাই বিভাগীয় উপ-পরিচালকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলার ৪৩ নং উত্তর শিলাকোঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো.শাওন ইসলাম।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ৪৮টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রিন্টার কিনে দেয়ার কথা বলে ১৫ হাজার টাকা করে মোট ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন মারুফুল ইসলাম। এই টাকা থেকে HP Laserjet Pro MFP M28a এই মডেলের ৪৮ টি প্রিন্টার ক্রয় করেন যার এক একটির বাজার মূল্য ১০ হাজার টাকা।

এতে মোট ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে বাকি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন এই সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা।

এবিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিভাগীয় উপ-পরিচালক ইফতেখার হোসেন (ভূইয়া) গত ৭ সেপ্টেম্বর তদন্তের নির্দেশ দিয়ে চিঠি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা প্রাথমিক ট্রেনিং ইউনিস্টিটিউট ( পিটিআই) এর সুপারিনটেনডেন্ট মো.কামরুজ্জামান গত ২৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে যান। এই প্রতিবেদনের পুর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন বিভাগীয় উপ-পরিচালক।

এদিকে এমন ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকটি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এছাড়া গত ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে খরচের জন্য দেয়া সরকারি বরাদ্দের পাঁচ হাজার টাকা কোন ইউনিয়নে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য।

অভিযোগকারী শাওন ইসলাম জানান, মারুফুল ইসলাম আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বারবার প্রিন্টার নিতে চাপ প্রয়োগ করেছেন। আমরা কেন এত টাকা দিয়ে নিন্মমানের প্রিন্টার নেব। তার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রাথমিক কিছু বিষয়ে অভিযোগ করেছি। আমি আশা করি কতৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা পারভিন জানান, আমি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জয়েন করেছি। তাই এসব অভিযোগের বিষয়ে অবগত নই। যেহেতু তদন্ত কমিটি হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মারুফুল ইসলাম জানান, আমরা ৩২ টি প্রিন্টারের অর্ডার নিয়েছি। ৮টি প্রিন্টার এখনো জমা রয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রতিটি প্রিন্টারের মূল্য ১০ হাজার তিনশত টাকা, ভ্যাট ও যাতায়াত খরচ সহ ১৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে যাদের কাছে ১৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে তাদের টাকা ফেরৎ দেয়া হবে। এছাড়া ২০১৯ সালের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এই খাতের ৪৫ হাজার টাকা রয়েছে এটি খুব দ্রুত দিয়ে দেয়া হবে।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ১২ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৯ সফর ১৪৪২ হিজরি, রোববার