মাদ্রাসা হলো ইসলামী নৈতিক শিক্ষালয় কিন্তু কী হচ্ছে সেখানে?

সম্পাদকীয় …

প্রত্যেক মুসলমানেরই মাদ্রাসার প্রতি একটা ভালো ধারণা রয়েছে। কেননা সেখানে ইসলামী শিক্ষা প্রদান করা হয়। যেন ইসলামী শিক্ষার আলোকে ছোটবেলা থেকেই আলোতে চলতে পারে। নৈতিক শিক্ষায় প্রতিটি মানব যেন বেড়ে উঠতে পারে। ইসলামের আদর্শে চলে মানুষের সেবা করতে পারে ও ইসলামের বৈশিষ্ট জগতের মাঝে তুলে ধরতে পারে। কিন্তু সেখানে যদি অমানবিক কোনো ঘটনা ঘটে বা এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকে তাহলে মাদ্রাসা সম্পর্কে মানুষের ধারণা কেমন হতে পারে?

প্রিয় সময়ে ‘মানিকগঞ্জে মাদ্রাসার অফিসে গৃহবধূকে ধর্ষণ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে একটি দুঃখজনক ঘটনার কথা আমরা শুনতে পেয়েছি। এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ইসলাম এ ধরনের শিক্ষা মাদ্রাসায় দেয় না বলেই আমরা মনে করি ও বিশ^াস করি। অথচ সেখানে এ ধরনের লজ্জাজনক ঘটনা ঘটে গেলো।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌর এলাকায় একটি মাদ্রাসার অফিস কক্ষে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় চার জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী। সেই নারী এখন লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না। সেই নারীর মামলায় ধর্ষক ও তার ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সারোটিয়া গাজী গ্রামের ছমেদ মিয়ার ছেলে ধর্ষক রিপন মিয়া (২৫) ও সুজল মিয়া পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

আমরা এধরনের ঘটনা কোনোভাবেই আশা করি না। যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে যায় তখন মানুষের মনে নানান প্রশ্নের জন্ম দেয়। যে বিশ^াসে মানুষ এগিয়ে চলছিলো, তাতে ফাঁটল ধরে যায়। বদনাম চারিদিকে যখন ছড়িয়ে যায় তখন মানুষ ছি ছি করতে থাকে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, গত ২৯ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে মাদ্রাসার পরিচালকের অনুপস্থিতিতে রিপন ওই গৃহবধূকে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন ওই কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে রিপনের পক্ষ নিয়ে তার ভাই সুজন মিয়া, আজিমপুর এলাকার আবু বক্কর ও জসিম উদ্দিন মীমাংসার কথা বলে তাদের সরিয়ে দেয়।

অভিযুক্ত রিপন ওই মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র। পরিচালকের অনুপস্থিতিতে সে ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলো। সুতরাং এটাই ছিলো তার প্রধান শক্তি ও সাহসের বড় হাতিয়ার। অর্থাৎ সুযোগ পেয়ে ক্ষমতা থাকলে মানুষ যা কিছু করতে পারে।

আমরা চাই না, মাদ্রাসার মতো ইসলামী নৈতিক শিক্ষা প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। মাদ্রাসা হলো ইসলামী নৈতিক শিক্ষালয়, কিন্তু এ ঘটনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই ঐ মাদ্রাসার অনেক বদনাম হওয়ার পাশাপাশি এলাকাসহ সারাদেশে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে।

হয়তো সুনাম পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যদিও দীর্ঘসময় পার করতে হবে; তবুও মানুষের মন থেকে এই নির্মম ঘটনার কথা অনেকদিন মনে থাকবে, বিশেষ করে এলাকাবাসীর মুখে মুখে অনেকদিন লেগে থাকবে। চারিদিকে আলোচনা সমালোচনা চলতেই থাকবে। তবে যার মাধ্যমে মাদ্রাসার মতো একটি পবিত্র জায়গার বদনাম হয়েছে তাকে আইনের আওতায় আনা উচিত এবং তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

আপডেট সময় : ০৩:০৫ পিএম

১০ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার