মনপুরা নিষিদ্ধ চায়না ম্যাজিক জালে জেলেদের মাছ শিকার, হুমকিতে দেশীয় মাছ

রাকিবুল হাসান, মনপুরা ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলার মনপুরা চায়না নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় ও জেলেরা।নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না জালের ফাঁদে দেশিয় প্রজাতির মাছ। সহজে বেশি মাছ ধরা পড়ায় নদী জুড়ে জেলেরা ব্যবহার করতে শুরু করেছেন নিষিদ্ধ এই চায়না ম্যাজিক জাল।

মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ কারেন্ট ও বাধাই জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না ম্যাজিক জালের ফাঁদে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ।
সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় খাল-বিল ও নদীজুড়ে স্থানীয় ও জেলেরা ব্যবহার করতে শুরু করেছে এই জাল।উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে চায়না ম্যাজিক জালের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা না করায় অবৈধ এ জালের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিলের জলে ও নদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরনের দেশীয় প্রজাতির মাছ চায়না ম্যাজিক এই জালে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে পানি বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, বোয়াল, শোল, টাকিসহ সব মাছ এই চায়না জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে খাল-বিল ও মেঘনা নদী ।

স্থানীয় ও জেলেদের কাছ থেকে জানাযায়, নিষিদ্ধ এই চায়না জাল প্রকাশে হাট বাজারে বিক্রয় হচ্ছে।সহজে এই জালের ব্যবহার ও ক্রয় হাতে নাগালে থাকায় এই জাল ব্যবহার করছে বলে জানান জেলেরা ।তবে সচেতন মহল মনে করেন,স্থানীয় ডিলার ও ব্যবসায়ীদের কে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে কোন ধরনের অভিযান পরিচালনা করে তা হলে কিছুটা নিয়ন্ত্রয় করা সম্ভব ।

তবে ,অনেক ব্যবসায়ীরা বলেন,মাওয়া থেকে এই জাল সংগ্রহ করে মনপুরা বিক্রয় করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

জনতা বাজার অনেক বাসিন্দা ও জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক পিস চায়না জালের দাম ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। সাধারণত ৫২ হাত লম্বা হয়ে থাকে এ জাল, লোহার ৪টি শিক দিয়ে খোঁপ-খোঁপ আকারে থাকে। সূক্ষ ঘন চায়না জালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো নদীতে মাটির সাথে লম্বা-লম্বিভাবে লেগে থাকে এবং দু’দিক থেকে মাছ ঢুকতে পারে। চায়না জালের এ ফাঁদে মাছ ধরতে মাছের কোন খাবার বা টোপ দিতে লাগে না। ফলে সুতার জালে মাছ ধরার যেসব কৌশল দিয়ে মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে তারা হতাশ এমন পদ্ধতিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা জনতা বাজার থেকে পশ্চিম পাশে মেঘনা নদী থেকে সংযুক্ত খালে ৫ কিঃমিঃ পর্যন্ত জায়গা জুড়ে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।এ চায়না জালে মাছ ধরার মহোৎসবে মেতেছে এক শ্রেণির মৌসুমী মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।
মাছ শিকার করতে আসা এক জেলে বলেন, এই জাল সারারাত নদীতে বা খালে পেতে রাখি, সকাল হলেই জাল তুলে ফেলি, জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে থাকি। তবে এই জালের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের প্রচার বা প্রচারনা করা হয়নি উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে ।তাই জেলেরা ভাবছেন এই জাল নদী ও খালে ব্যবহার উপযোগী। তবে উপজেলা মৎস্য অফিস বলছেন তাদের প্রচারনা চলমান রয়েছে।


সাকুচিয়া আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব কলেজ (সমাজকর্ম) প্রভাষক মনির উদ্দিন বলেন,কলেজে আসা যাওয়ার পথে হঠাৎ এই নিষিদ্ধ চায়না জাল দেখতে পাই। এই জাল খাল বিলে বসিয়ে শিকার করা হচ্ছে দেশীর প্রজাতির মাছ।এমন চলতে থাকলে এক সময় মাছ শূন্য হবে মনপুরার খাল বিল ।

মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন,নদীতে ও খালে এভাবে অবৈধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা ঠিক না উল্লেখ করে বলেন চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার একটা বেআইনি কাজ,প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা হচ্ছে।এবং খুব তাড়াতাড়ি আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে। অবশ্যই এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কোনভাবেই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেওয়া যাবে না।