আমি কলিমুদ্দি সিনা ৩৮

যুবক অনার্য

সময় ফুরায়া আইছে
মানুষের পেটে পাথর
মুখে সিলাই কইরা দিছে
গৃহকর্তা দর্জি হয়া গেছে
সিলাই মাইরা আটকাইয়া দিসে ঠোঁট
নাটক চলতাছে দ্যাশ লইয়া
চলতাছে মগের মুল্লুক কনসার্ট
দুইদিনের যোগি ভাতেরে কয় অন্ন

আমি কিন্তু সলিমুদ্দি’র পুত কলিমুদ্দি
বাপের কইলজা আছিলো ৩৬ ইঞ্চি আমার কইলজা ৩৮
না হইলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া- জোলাভাতি খেলার সাহস পাই ক্যামনে
বাঁইচা থাকতে সাহস লাগে
আমি উপরঅলা ছাড়া ডরাইনা কাউরে
নূর হোসেনের দ্যাশে দিনদুপুরে ডাকাতি
হইতাছে চুরি লোপাট কইরা সব বৈদেশে পাঠাইয়া দিতাছে আমাগো রক্তমাংস ঘাম ঝরাইন্না ট্যাকাগুলি
দিন যায় না একমতন
কবিতা কওনের টাইম শ্যাষ এখন কইতে হইবো একশন একশন ডাইরেক্ট একশন কইয়া একশন চালায়া দিতে হইবো

গেদু’র মা অ গেদু’র মা
তোমার শইল্লের মাখনে কারা নাকি হাত দিছে
গেদু’র মা লুকাইতে চায়
আরে গেদু’র মা আর কয়টাদিন সইহ্য করো
হাতগুলা ভাইঙ্গা দিমু
নির্বাচনটা শেষ হোক
গেদু’র মা কৌতুকের হাসি দেয়- ‘ নির্বাচন হইলে তো!’
আমি কলিম সিনা ৩৮
নির্বাচন না হইলেও সময় কিন্তু ফুরায়া আইছে
আবার খিক খিক কইরা কৌতুকের হাসি

আমি এখন দাদার অফিসে
দাদা জানেন কে কে মূলত কবি এ নিয়ে তার একটি সংকলন বেশ জনপ্রিয়
দাদা নিজেকে মনে করেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
এরকম নিজেকে শ্রেষ্ঠ কবি মনে করবার
লোক নেহাৎ কম নয়
যাদের কবিতা হয় না তারাও অনেকেই তো এমন নিজেকে ভেবে নিয়েছেন যেমন অমুক দশকের তমুক, তমুক দশকের অমুক- মুর্খতা, মানসিক সিকনেস
দাদা তার কবিতা নিয়ে আমাকে লিখতে বলেন আমি লিখি
নিজের পয়াসায় বই ছাপি
একদিন মিথ্যে অজুহাতে হাজার পঞ্চাশেক টাকা চান
আমি দেই
উনি মেরে দেন গোটা পঞ্চাশ হাজার
আমি সরে আসি
দাদারা এমনই হন
তিনি আছেন গৃহকর্তার ছত্রছায়ায়
মুখে অসাম্প্রদায়িক বুলি
আদতে গভীর সাম্প্রদায়িক
মুখে মিথ্যের ফুলঝুরি
দাদারা আসলে এমনই
না হলে কৃতঘ্ন কেনো এমন

দাদা,কিছুদিন পর আপনার মাথার উপরের ছাতাটি সরে যাবে তখন কি হবে উপায় – আমি ভাবি
দাদা স্বপ্নের কথা বলেন
দাদার স্বপ্ন – এই দেশ অমুক জাতি আর তমুক জাতি ভাগেযোগে নিয়ে নেবে ; নিলে নাকি অভিমত দাদার – ভালোই হবে
অমুক জাতি নাকি নাস্তিক -তাই ভালো,আর
তমুক জাতি হলে দাদার নাকি পোয়াবারো
মুখে নাস্তিক্যবাদ নিয়ে পঞ্চমুখ আদতে গোঁরা সুবিধাবাদী বক ধার্মিক

চাদ্দিক ছেয়ে আছে আঁধার কালোয়

দাদা কবিতায় যাপন করেন এ কথা মিথ্যে নয় মিথ্যে নয় যে তিনি এই দেশ নিজের দেশ মনে না করে তমুক দেশকে আপন ভেবে আসছেন বংশপরম্পরায়
দাদা – রইলো অনুরোধ – কিছুদিন পর তমুক দেশকে আসতে বোলবেন আমাদের দেশে আর কিছু না হোক অন্তত দেখিয়ে দেবো কবিতা কাকে বলে কাকে বলে বাংলা ভাষা

আমি বাংলার খাই পরি বাংলার গান করি

সকাল বেলা বার হয়া দেখি দেয়ালে চিকা ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা তোর ভাগ্যে কিছু নেই’
কয়দিন পর চ্যানেলে নিউজ
কইতাছে গ্রাফিত্তির ইতিহাস কইতাছে সুবোধরে পালাইতে হইবো কারণ এই দ্যাশের শুভ বোধ হারায়া গেছে
হারায়া যাক সুবোধরে পালাইলে চলবো না
রাহমান ভাইয়ের সুধাংশু যেমন পালায় নাই সুবোধও থাইকা যাইবো জীবন দিয়া নূর হোসেনের মতো ছিনাইয়া আনবো গণতন্ত্র

একশন একশন ডাইরেক্ট একশন

আগে শুনি নি দেখিনি এরকম
বোম- বোতলে পেট্রোল
ছুঁড়ে মারছে বাসে মানুষ মুহুর্তে পুড়ে হচ্ছে ছাই কে মারছে কেনোই বা
চরম দুঃসময়ে পতিত আমার প্রিয়তম দেশ
ক্ষমতা শুধু ক্ষমতার লোভ
ক্ষমতা একদিন ঢুকে যাবে গুহ্যদ্বারে তোমাদের
ক্ষমতা একদিন পালাবে তোমাদের ছেড়ে একদিন তোমরাও পালাবে ক্ষমতাকে ছেড়ে

ট্রা লা লা লারা ট্রা লা লা লারা

ধর্ম অনেক ধরনের হয়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরে উঁচু নিচু সাদা কালো লাল নীল জাত পাত সব কিছুই তো ধর্ম সেজে আছে মানব ধর্ম নামেও পুস্তকে একটি অধ্যায় দেখা গেছে মুখে আর পুস্তকের বাইরে এর অস্তিত্ব কোথায় নেড়ে ঘেটে দেখা যেতে পারে
সমগ্র পৃথিবী জুড়েই ধর্ম বড়ো আত্মকেন্দ্রিক
ইনি বলেন – আমার ধর্মই সত্য বাকি সব ঝুট হ্যায় তিনি বলেন – আমার ধর্মই সত্য বাকি সব ঝুট হ্যায়
এই নিয়ে মারামারি খুনাখুনি ধর্ষন দেশ দখল রোহিঙ্গা পিটিয়ে পুড়িয়ে ছাই আরও কতোকিছু ধর্ম হয়ে ছিলো আছে থেকে যাবে অথচ যে ঈশ্বরের দোহাই পেড়ে হচ্ছে করা এসব তিনি কি এরকমই চেয়েছেন- প্রশ্ন রয়ে গেলো

ইতিহাস ছাইনা দেখি- শুনছি এক, হইছে আরেক
ইতিহাস ছড়াইয়া যাইতাছে গুগলে থামানোর ক্ষমতা নাই কোনো ক্ষমতার
ইতিহাস বদলাইয়া লাভ নাই মানুষ এতো চদু না ভালা মন্দ লাভ লোকসান বুঝে
এই দ্যাশ কার? এই দ্যাশ শুধু আমার বাপ সলিমুদ্দি’র না এই দ্যাশ আমার রহিমের করিমের বেবাক মাইনষের
এই দ্যাশ ক্ষমতারও না
এই মাটি তিরিশ লক্ষ শহিদের
আমরা কি ভুইলা গেছি – জহির রায়হান ক্যান লিখসিলো ‘স্টপ জেনোসাইড’, কারা খুন করছিলো বুদ্ধিজীবী
স্বাধীনতার পরে কারা এই দ্যাশ করতে চাইছিলো লোপাট এখনো কারা চাইতাছে দ্যাশটারে গিল্লা খাইতে – বুঝি আমরা সব ;সময়টা ভালা না – গেদু’র মার মাসিক সারা রাষ্ট্রের মাসিক চলতাছে কেউ কথা কয় না মুখে সিলি দিয়া দিছে
আমি সলিমের পুত কলিম কইতাছি খোদার কসম মাসিক ছুটাইয়া দিমু
সারা দ্যাশ আবার স্বাধীন হইতাছে দেইখা লইয়ো খুব শিগগিরই হইতাছে সময় বদল
একটু থাইমা আবার কপালে ভাঁজ পড়ে – দ্যাশটার ভবিষ্যৎ কী অমুক ভাইগো নাকি তমুক দাদাগো পেটে যাইবো নাকি নতুন কইরা আবার রাজাকারের হাতে গণতন্ত্র রেপড হইয়া চোখের জলে ভাইসা যাইবো বাংলা মায়ের মাটি।

একশন একশন ডাইরেক্ট একশন

এক্ষণে আসিয়া কিঞ্চিৎ সাধুকথনে নামাইবো বারিধারা – রবি কহিছেন – বহিছে আনন্দধারা
আমরা তদ্রুপ না হইলেও যাথাযোগ্য আগুনে হৃদয় মন্দির পুড়িবার করিনু শপথ।এ মন্দিরতটে যাহা বস্তুত হৃদয় জারিত পুস্পপ্রাসাদ হেথায় রচিনু
সর্বাংশকৃত প্রকাশ্য কাহিনি – রহিলো গোপনাচ্ছাদনে যাহা -তাহা বোধকরি এইমতো- আপনি কি চাহিতেছেন হে জনগণ
চাহিতেছেন শান্তিধারা বহিয়া যাক থরে বিথরে
প্রবজ্যায় প্রান্তিকে হাওয়ার ডানায় বহিয়া যাক ষড়ঋতু
কীভাবে হইবে সেইমতো যেমন শিক্ষক শিক্ষাকর্ম সম্পাদনে চরম সত্য করিলে উন্মোচন উহাদের চলিয়া যাইবে চাকুরী মরিবে ভাতে মরিবে জলে কবি যদিচ করিতে চান সত্যের উন্মোচন উহাদের উদ্দেশে জারি হইবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আর সাংবাদিক? হা হা হাসাইলেন বড়ো সত্য কহিলে চাকুরী নাই পথের ফকির হইয়া ঘুরিবে দিগ্বিদিক
কীভাবে বহিবে তবে শান্তিধারা কুসুমিত ধারাপাত কেননা এখন যে সময় -রাবিন্দ্রীক নহে,নহে নজরুলীয়।আহা হে জনগন কী হইবে উপায়- অতিরেক এই অতিমারি বিধৌত
পাটাতনে – এই হিজলতালতমাল জামরুল সমতটে?

উপসংহার : সলিমুদ্দির পুত কলিমুদ্দি ৩৮ ইঞ্চি সিনা লইয়া কোথায় হারাইয়া গেলো এই দেশে তাহার সন্ধান মিলিলো না আর।প্রসঙ্গত গেদু’র মা’র মাসিক থামে নাই থামে নাই মাসিক পরাধীনতাময় এক স্বাধীন রাষ্ট্রের।