পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কোরবানীর বাজার আসছে কালু-চান্দু

জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় এই প্রথমবারের মত কোরবানীর জন্য বাজার ধরতে কালু ও চান্দু নামের এই দুই ভাই বিশালদেহের দুটি ষাঁড়কে প্রস্তুত রেখেছেন সিদ্দিক মীর নামের এক কৃষক । কালুর ওজন ১ টন এবং চান্দুর ওজন ২২ মন হবে বলে এমন ধারণা দিয়েছেন। যার বাজার মূল্য কালু ১১ লক্ষ টাকা আর চান্দুর ৭ লক্ষ টাকা হাঁকিয়েছেন কৃষক পরিবার। এবার দক্ষিণাঞ্চলে কালু ও চান্দু কোরবানির বাজার কাপাবে এমন ধরনা করছেন এলাকাবাসী।

উপজেলার মহিপুর থানার লাতাচালী ইউনিয়নের থঞ্জুপাড়া গ্রামে শাহিওয়াল ও হলিস্টিন জাতের বিশালদেহী ষাঁড় কালু-চান্দুকে দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা আসছেন তার বাড়িতে। ইতো মধ্যে কালুকে কিনলে সাথে একটি খাসি উপহার দেয়ার ঘোষণাও দেন এই খামারী ছিদ্দিক ।

সিদ্দিক মীর পেশায় একজন কৃষক। তিনি জানান, ৪ বছর আগে থেকে দেশীয় একটি গাভীর সাথে কালুকে ৮০ হাজার টাকা দামে কিনে পালন শুরু করে। পরে বছর কপালে চাদ নিয়ে জন্ম দেন আর একটি ষাড় লালন পালন করতে করতে বিশাল বড় হতে থাকে এর পর আমি গরু প্রতি যতœ নেই এবং পশু ডাক্তারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে আমি খুব যতœ দেই গরুর প্রতি। বর্তমানে ঔ গাভীটি আর দুটি বাচ্চা আছে তাও আমার পরিবার নিয়ে দেখা শুনা করি। বড় এই ষাড় দুটি আলাদা ঘরে রাখি প্রতি দিন তাজা ঘাস ও ভুট্টা গুড়া খাওয়াই মাশাল্লাহ দেখত দেখতে অনেক বড় হইছে আসলে এত বড় হবে তা ভাবতেও পারি নাই।বর্তমানে এসে তার প্রতিদিন খাবার লাগে প্রায় হাজার টাকার। এখন পর্যন্ত তিনি এদের পিছনে খরচ করেছেন প্রায় দশ লাখ টাকা।

তবে আদর-যতেœ কালু-চান্দুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খেয়াল রাখছেন সিদ্দিকের পরিবারের সবাই। সারাক্ষণ মাথার উপরে ফ্যান চালানো, দৈনিক ২-৩ বার গোসল করানো সব মিলিয়ে তাদের সেবা-যতেœ ত্রুটি রাখে না তাঁরা।

সিদ্দিক মীর আরো বলেন, আমি কালুকে বিক্রি করে তার সাথে একটি খাসি ফ্রি দিবো। তবে চান্দুর সাথে কিছু ফ্রি নেই। আমি সখের বসে পালন শুরু করে আজ আমি সফলতা পেয়েছি তবে একন কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে পারলে আমি সার্থক।

প্রতিদিন ওই ষাড় দুটি বিয়ে কষ্ট করতে যাওয়া ছিদ্দিক বড় ছেলে বলেন, প্রথমে আমরা একদম ভাবি নি যে ওই বাচ্চা দুই এত বর হবে। বাবায় দেখাশোনা করত আমরা কোন দেখাশোনা করতাম না যখন দেখি উত্তর অঞ্চলের গরুর খামারে যে সব বড় বড় গরু দেখি অথচ ওই গরু দেখি আমাদের বাড়ীতেও তখন থেকে বেশী গুরুত্ব দেই। জানেন গত এক বছর যাবৎ বেড়াতে যেতে পারি না এই গরুর জন্য। তিন থেকে চার জন লোক লাগে এই গরু সামাল দিতে। এখন ভালোভাবে বেচাকেনা করতে পারলেই হয়।

আলমগীর হোসেন নামের এক প্রতিবেশী দৈনিক বলেন, আমরা অত্র এলাকায় এ রকম ষাঁড় আর দেখিনি। গত কয়েকবছরেও এই এলাকায় তৈরি হয়নি, তাই বেশ ভালো লাগছে এবং অনেক লোক এগুলোকে দেখতে এসেছে। আমরা প্রতিবছর বাজারে এত বড় ষাঁড় আসলে দেখতে যেতাম কিন্তু এখন নিজের এলাকায় দেখছি।

কলাপাড়া উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গাজী শাহ আলম বলেন, কৃষক সিদ্দিকের এই ষাঁড় দুটি উপজেলার মধ্যে অন্যতম তার পরিশ্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাঁকে অনুসরণ করে যারা পশু পালনে আগ্রহী হচ্ছে তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো । এবছর উপজেলায় সর্বমোট কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৯৮২ টি পশু।