করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে চাঁদপুর জেলার বাবুরহাটবাসী

চাঁদপুর প্রতিনিধি :
চাঁদপুর সদর উপজেলার পৌর ১৪নং ওয়ার্ড বাবুরহাট বাজারটি একটি সুবিশাল বাজার। এই বাজারটি চাঁদপুর পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এবং এর চর্তুদিকে রয়েছে কল্যাণপুর, আশিকাটি, মৈশাদী, তরপুরচন্ডীসহ ক’টি গ্রাম।

এই ক’টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দৈনিক নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার স্থায়ী ঠিকানা এই বাজার। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই ক্রেতা সাধারণ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কেনা কাটা করতে আসেন এই বাজারে।

এছাড়াও এই এলাকায় চাঁদপুর জেলা পুলিশ লাইন, জেলা কারাগাড়, বিসিক শিল্প নগরী ও জেলা পরিষদ থাকার কারণে এই এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্বও অনেক। ফলে প্রতিনিয়তই বাবুরহাট বাজারে ভীড় লেগে থাকাটাই স্বাভাবিক।

বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে বিধি-নিষেধ মানতে বলেছেন, সেই সময়ে আগের স্বাভাবিক ভীড় বা জনসমাগম কতটুকু যৌক্তিক। জনসমাগম রোধে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন গত শুক্রবার সন্ধা ৭টা থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছেন এবং জরুরি সেবা ও খাদ্য ও ঔষধ ব্যাতিত সকল দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন।

নারী-পুরুষের যে কোনোা যৌ*ন সমস্যার (যৌ*ন দুর্বলতা, সন্তান না হওয়া, সহ*বাসে ব্যর্থতা, দ্রুত বীর্য*পাত, মেহ-প্রমেহ) সমাধানে ‘নাইট কিং’ ও ‘নাইট কিং গোল্ড’ কার্যকরী। বাংলাদেশের যে কোনো জেলা বা উপজেলায় কুরিয়ার সার্ভিসযোগে ‘নাইট কিং’ পেতে যোগাযোগ করুন :
হাকীম মিজানুর রহমান
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার, যোগাযোগ করুন : (সকাল ১০টা থেকে রাত ০৮ টা (নামাজের সময় ব্যতীত) 01762240650, 01834880825
এছাড়াও শ্বেতী রোগ, ডায়াবেটিস, অশ্ব (গেজ, পাইলস, ফিস্টুলা), ব্লকেজ, শ্বেতপ্রদর, রক্তপ্রদর ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়।

 

পরবর্তীতে জরুরি সেবা ও ঔষধ ব্যতীত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুপুর ২টার পর বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও এসময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভীড় না করে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন।

এছাড়াও অতি প্রয়োজন ব্যতীত কাউকেই বাসা থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশ দেন এবং যদি বাসা থেকে বাহির হন তাহলে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সাথে রাখার নির্দেশ দেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের এই নির্দেশ এখন সকলেরই জানা।

কিন্তু বাবুরহাট বাজারে প্রশাসনের এমন নির্দেশের কোনটিই মানা হচ্ছে না। গতকাল বাবুরহাট বাজার প্রদক্ষিণ করে দেখা যায় প্রায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই খোলা রয়েছে এবং বাজারে উপচে পড়া ভীড়। প্রতিটি দোকানেই সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মানাই হচ্ছে না।

যেখানে সারা বিশ্বে বিভিন্ন দেশ যখন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে লকডাউন ঘোষণাসহ নানা কঠিন কর্মসূচি পালন করেও হিমশিম খাচ্ছে। তখন বাজারে এই অবস্থা দেখলে সত্যিই গা শিউরে উঠে। বাজারের কাপড়, কসমেটিকস, হার্ডওয়ার সহ বিভিন্ন দোকানের ১ বা ২ সার্টার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বা মডেল থানা পুলিশ আসছে খবরে বন্ধ হয়ে যায় ওইসকল দোকানপাট। আবার ভ্রাম্যমাণ আদালত ও মডেল থানা পুলিশ চলে গেলে আবার সেই আগের অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এদিকে এমন অবস্থায় বাজারে ফুটপাতে অস্থায়ী কাচামালের দোকানও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকাংশে যার ফলে রাস্তার পরিধি কমে যাওয়ারও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাজারের আগত কয়েকজন ক্রেতা সাধারণকে কি প্রয়োজনে বাজারে আসা হয়েছে, এমন প্রশ্নে অনেকেই সঠিক কোন জবাব দিতে পারে নি।

যারা এসেছেন বেশিরভাগই ছোট খাটো প্রয়োজনে বাজারে এসেছেন। যেগুলো না হলেও দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানো যায়। সবচেয়ে আতংকের বিষয় হচ্ছে বাজারে আগত ক্রেতা সাধারণের অধিকাংশই মহিলা এবং এদের অনেকের সাথে শিশু সন্তান রয়েছে।

এছাড়াও মতলব থেকে চাঁদপুরগামী বিভিন্ন সিএনজিগুলো বাবুরহাট বাজারের সড়কটি ব্যবহার করে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনই ফেসবুকে ছবি দিয়ে সমালোচনা করছেন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও অতি প্রয়োজনে আশা কয়েকজন ক্রেতা সাধারণ।

বাবুরহাট বাজারে একটি নির্বাচিত বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকলেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাজারে জেলা প্রশাসনের জরুরি বিজ্ঞপ্তিটি ব্যাতিত কোন কার্যক্রমই পরিচালনা করেনি বলে জানা যায়।

যেখানে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও জনসমাগম রোধে এবং অতি প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ কার্যকর করা বাজার ব্যবস্থাপনা কিমিটিরই দায়িত্ব ছিল সেখানে তারা রয়েছেন পুরো নিষ্ক্রিয়। বিষয়টিও নিয়েও এলাকার সচেতন কয়েকজন হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে কল্যাণপুর ও আশিকাটি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের তথ্য থেকে জানা যায় যে গত ক’দিনে এই এলাকায় দেশের সবচেয়ে করোনা আক্রান্ত জেলা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৪ জন ২টি ইউনিয়নে এসেছেন। যারা বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

জানা যায়, এরা প্রশাসনের ভয়ে বাড়ির বাইরে বের না হলেও পরিবারের সদস্যদের সাথেই থাকছেন। ফলে সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েই যায়।

এদিকে বাজারে জনসমাগম রোধে প্রশাসনের কম নজরদারির কারণেই এমন অবস্থা বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিমত প্রকাশ করেন।

তারা জানান, এরকম পরিস্থিতি রোধে প্রশাসনকে ফোন করলে কেহই বিষয়টি কর্ণপাত করে না। তারা আরও বলেন, প্রশাসন দুপুরে বাজারে প্রবেশ করেন যখন বর্তমান পরিস্থিতি ছাড়াও বাজার জনসমাগম কম থাকে। এসময় অনেকেই ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, ‘প্রশাসন খালি মাঠে গোল দিতে পারদর্শী’!

বাবুরহাট বাজার এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে ভয়ংকর হতে পারে করোনা পরিস্থিতি। এছাড়াও বাবুরহাট এলাকাটি বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার ট্রানজিট হওয়ায়ও এখানে করোনা সংক্রমন ঘটতে পারে।

এলাকার সমাজ সচেতন মানুষ এই এলাকার করোনা সংক্রমণ রোধে ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাবুরহাট বাজারের জনসমাগম রোধে ও প্রয়োজন ব্যতীত বাজারে না আসতে এবং অস্থায়ী কাঁচামালের দোকান ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ব্যতীত অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধে প্রয়োজনে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করে হলেও দ্রুত কার্যকর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের আশু জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। নতুবা এই এলাকায় অবস্থিত জেলা পুলিশ লাইনসহ জেলা কারাগার সংক্রমিত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মনে করেন এই এলাকার সমাজ সচেতন সাধারণ মানুষ।

ছবি : লকডাউন চলাকালীন সময়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে বাবুরহাট বাজারের মধ্যে ক’টি সড়কে উপচে পড়া ভীড়