আমাদের বাধ্য থাকা উচিত

‘নবীগঞ্জে প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য! করোনা ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা’

সম্পাদকীয়…

চলছে করোনা মহামারী। বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্যে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। কারণ, করোনা ভাইরাস চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে কেউ আর প্রাণে বাঁচতে পারবে না। সুতরাং সাববধান থাকাই আমাদের সকলের উচিত। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছেন; কেননা শিক্ষার্থীরা সকলে একসাথে মিলিত হওয়ার উপযুক্ত স্থানে করোনা ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু এক শ্রেণীর লোকজন এসবের কোনো তোয়াক্কাই করছেন না।

প্রিয় সময়ে ‘নবীগঞ্জে প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য! করোনা ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি পরিস্কারভাবে আমাদের আঙ্গুল দিয়ে অবাধ্যতার প্রমাণ দেখিয়ে দিচ্ছে। তাদের অবাধ্যতা দেখে মনে হচ্ছে, তারা কোনো কিছুকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। দিব্বি কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের এনে জড়ো করে বাণিজ্য খুলে বসেছে। ওই অসাধু ব্যক্তিরা নির্ভয়ে প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। অবাধ্যতায় মনে হচ্ছে, নবীগঞ্জের অসাধু ব্যক্তিরা নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি নয়। উপরন্তু তারা কোনো মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। নিয়মনীতি মানার ধারে কাছে নেই। এতে করে অদৃশ্য চোরের মতো করোনা হানা দিতে কোচিং সেন্টারে আসা শিক্ষার্থীদের মাঝে। আর এভাবেই ছড়িয়ে যেতে পারে করোনা ভাইরাস সারা এলাকায়।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, প্রকাশ্য দিবালোকে মার্কেটের ভেতরে জনসম্মুখেই সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্কুল কলেজের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে চালানো হচ্ছে প্রাইভেট কোচিং সেন্টার। প্রশ্ন হলো, আগত শিক্ষার্থীরা কি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে মোটেও জানতো না? অথবা, তাদের অভিভাবকরাও কি মহামারী করোনা ভাইরাস বিষয়ে অজ্ঞ? আবার মার্কেটের ভেতরে যেহেতু কোচিং সেন্টার, সেহেতু এলাকাবাসীদেরও বিষয়টি সম্পর্কে উদাসীনতা রয়েছে বলে পরিস্কার। কিন্তু কেন?

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রাইভেট কোচিং সেন্টার চালু থাকার বিষয়ে সচেতন মহলে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া একেবারেই স্বাভাবিক। এই করোনার সময়ে আমরা প্রতিদিনই টিভি ও পত্র পত্রিকার মাধ্যমে মৃত্যুর খবর পাচ্ছি। তাছাড়া দূরে কোথাও প্রিয়জনের মৃত্যুরও খবরও কেউ কেউ এর মধ্যেই পেয়ে গেছে। চারিদিকে মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছে। অথচ এর মধ্যেও তারা নির্ভয়ে কীভাবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এহেন কাজ করতে পারে? আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে নবীগঞ্জ উপজেলায়। আবার মৃত্যুবরন ও করেছেন একজন। এতো কিছুর পরেও কেন তারা ভয় পাচ্ছেন না? অপরদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, এভাবে কোচিং সেন্টার চললে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি রয়েছে সেসব শিক্ষার্থীদের। অবশ্য এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবককেও সচেতনতা বেশি দরকার রয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নিয়েও আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে। অবশ্যই অভিভাবকদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের প্রতি অবহেলা ও খামখেয়ালীপনা রয়েছে।

তবে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোবাইল ফোনে সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছেন বলে আমরা সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। একজন শিক্ষকের এভাবে হুমকি দেয়াটা যদিও হাস্যকর; কিন্তু কতোটা দু:সাহসের! অবশ্য এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দ্রæত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানতে পেরে আমরা অভিভূত হয়েছি। আমরা আরো জানতে পেরেছি, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাদেক হোসেন বলেন, কোচিং সেন্টারের বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই কোচিং সেন্টার চালু রাখার নিয়ম নেই। যারা কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ অবশ্যই আমরা সে রকম কঠোর পদক্ষেপের অপেক্ষা করছি!

আমরা জানি, জোর করে কোনো কিছু হয় না। কিন্তু এই করোনা মহামারী থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের অবশ্যই বাধ্য থাকা উচিত।