যেখানে সভ্যতা শিক্ষা দেয়া হয় সেখানে জুয়ার আসর কেনো?

 

 

প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৮ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, শুক্রবার

সম্পাদকীয়…

‘বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয়, এখানে সভ্যতারই ফুল ফোটানো হয়–’ গানটি আমরা কেউ কেউ বহুবার শুনেছি। ভালো লাগার একটি গান। সত্যিই বিদ্যালয়ে সভ্যতা শিক্ষা দেয়া হয়; কেননা বিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করে তার সভ্য হয়ে মানুষ হয়। মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যেই বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ সেটা আলাদাভাবে বোঝানোর জন্যে বিদ্যালয়।

কিন্তু প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রাথমিক স্কুল ভবনের বারান্দায় জুয়ার আসর’ শিরোনামে সংবাদটির মাধ্যমে আমরা জেনেছি, সেখানে অসভ্যদের কাণ্ডকীর্তি। এটা যে সভ্যতা শিক্ষার একটা জায়গা সেটা তারা ভুলে গেছে। তাদের সেই হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে গেছে। অথবা এলাকার দাপুটে লোক হওয়ায় নির্ভয়ে ঘৃণ্য কাজ করতে দ্বিধা করছে না।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাস্থ কসবা উপজেলাধীন ২নং মেহারী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে অবস্থিত বাহারআটা ও পুকুরপাড় ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবনের বারান্দায় করোনাভাইরাসের জন্য সরকার কর্তৃক ঘোষিত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই চলছে জুয়া খেলা।’ এতে বোঝা যায়, এই সুযোগটা তারা দারুণভাবে কাজে লাগাচ্ছে। জুয়া খেলা ভদ্র সমাজে চলে না। যারা ভদ্র লোক, সভ্য যারা তারা জুয়ার দিকে মনোযোগ দেয় না। এটা ঘৃণিত একটা দিক। এই বিষয়টি তারা হয়তো জানেই না যে, বিদ্যালয়ের বারান্দায় এসব খেলা করা অন্যায়। যেহেতু বিদ্যালয়ের বারান্দায় খেলা হচ্ছে, সুতরাং এটা সকলের দৃশ্যমান। সকলেই যাওয়া আসার পথে দেখছে। সকলের খারাপ লাগলেও কেউ কিছু বলছে না সাহস করে। এ বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ও এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানদের এগিয়ে এসে ওদের বোঝানো যেতে পারতো। হয়তো সেই সুযোগ হয়ে উঠেনি।

আমরা আরো জেনেছি যে, ঐ যুবকরা স্থানীয়। স্কুলের বারান্দায় শুধু জুয়া খেলাই সীমাবদ্ধ নয়, চলে ধূমপান, মদ এবং গাঁজার মতো নেশাজাতীয় দ্রব্যাদি সেবনও। সুতরাং তাদের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া স্কুলের মতো একটি পরিচ্ছন্ন ও বিদ্যা শিক্ষার স্থানে এসব চলতে দেয়া যায় না। ঐ যুবকদের ও তাদের অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে অবশ্যই স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী। অন্যথায় বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি হয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আরো জেনেছি যে, সেই স্কুলের গ্রামের সচেতন ব্যক্তিবর্গ অনতিবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এই দাবি তারা করতেই পারেন; যেন স্কুলের বারান্দায় প্রতিনিয়ত চলমান জুয়া, ধূমপান, মদ ও গাজা সেবন বন্ধ হয়।

সুতরাং আমরা আশা করবো, যেন ঐ যুবকদের সেখান থেকে তাড়ানো হয় এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষা করা হয়। কেননা, যেখানে সভ্যতা শিক্ষা দেয়া হয় সেখানে জুয়ার আসর কেনো? আমরা এমন পরিস্থিতি মোটেও আশা করতে পারি না।

 

 

প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৮ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, শুক্রবার