সম্পাদকীয় …
পাখি আমাদের সম্পদ, পাখি প্রকৃতির সম্পদ। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় পাখির ভূমিকা অপরিসীম। পাখি প্রকৃতির অনেক উপকার করে। তাই পাখি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ওদেরকে ওদের মতো বাঁচতে দেয়া উচিত। ওদেরকে স্বাধীনভাবে চলতে দিতে হবে। কিন্তু আমরা মানুষ অনেক সময় পাখিদের হত্যা করি, অন্য বড় অন্যায়। আর এই অন্যায় কাজটি কেউ কেউ প্রকাশ্যেও করে থাকে। পাখি হত্যা করা নিষেধ রয়েছে। তবুও অনেকে পাখি হত্যা করে থাকে।
প্রিয় সময়ে ‘হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ‘পাখি শিকারী নিজেই শিকার’ র্শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি কতোটা নির্মমতার পরিচয় দিয়েছে একজন পাখি শিকারী। সেই শিকারী দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি ধরা পড়েছেন। ঘটনাটি হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ঘটেছে। তিনি পাখি শিকারের জন্যে চমৎকার ফাঁদ তৈরি করতেন। সেই ফাঁদের ভেতরে লুকিয়ে থাকেন। লুকিয়ে থাকা ব্যক্তির নাম আব্দুল হামিদ। তিনি উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। অনেকদিন ধরে তিনি পাখি শিকার করে আসছেন। তিনি সুকৌশলে পাখিদের ধরে বিক্রি করেন। আর সেই শিকারী ফাঁদ পেতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় শিকারিকে বের করে এনে একদিন জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ঐ মুহূর্তে শিকার হওয়া পনেরটি পাখি তার কাছে পাওয়া যায়। সেগুলো সাথে সাথে অবমুক্ত করা হয়। পার্খিরা প্রাণে বেঁচে যায়।
লোকটির কা-কীর্তি হাস্যকর হলেও অত্যন্ত দু:খজনক ছিলো। তিনি পাখিদের শিকার করে অমানবিকতার পরিাচয় দিয়ে চলেছেন। সেদিন তিনি পাখি শিকারের জন্যে হাওরে কলাগাছের পাতা, বেত এবং বাঁশ দিয়ে তৈরি করেছিলেন একটি ছোট ঘর। সেই ঘরের ভেতরে নীরবে চুপটি করে অবস্থান করেন আব্দুল হামিদ। আর সেই ঘরটির পাশেই বাঁধা ছিল একটি হতভাগ্য বক পাখি। তখন উড়ে যাওয়া অন্য পাখি বসে থাকা বকটিকে দেখে ঘরে বসলে শিকারি টান দিয়ে মুক্ত পাখিটিকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে নেন। এভাবেই আব্দুল হামিদ প্রতিদিনই পাখি শিকার করতেন। একদিন বিকেলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বিষয়টি দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘরের ভেতর থেকে শিকারি আব্দুল হামিদকে বের করে আনেন এবং এক হাজার টাকা অর্থদ- করেন। তখন পনেরটি পাখি ঐ শিকারীর কাছে ছিলো। সেগুলো সাথে সাথে খোলা আকাশে ছেড়ে দিলেন।
আমরা জানি, শীতার আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে বিদেশী অতিথিরা দল বেধে চলে আসে। তখনই আমাদের দেশের কিছু দুষ্টু শিকারীরা সুযোগ গ্রহণ করে ও অতিথি পাখিদের হত্যা করে। এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে; যেন এ ধরনের শিকারীদের প্রতিরোধ করা যায়। আমরা চাই, পাখিরা নিরাপদে থাকুক। এধরনের শিকারীদের প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য
২১ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ০৫ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪২ হিজরি, বুধবার