নোংরা জনপ্রতিনিধি দিয়ে কোনো ভালো কাজ চলতে পারে না

সম্পাদকীয় …

প্রভাবশালী হলে গোপনে কিম্বা প্রকাশ্যে নীরবে নিভৃতে অপরাধ করেও রক্ষা পেয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারে না; এমনকি অভিযোগ অথবা সমালোচনা করারও সাহস কেউ পায় না। সুতরাং ভুক্তভোগীরা মুখবুজে সবই সহ্য করে যায়। যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ থাকে না, সেহেতু তারা প্রশ্রয় পেতে পেতে মাথায় গিয়ে উঠে বসে। অবশ্য অতি বাড়া বেড়ো না ঝড়ে পড়ে যাবে-সে অবস্থায় চলে গেলে তখনই তাদের পতনের সূত্রপাত হতে থাকে।

‘প্রিয় সময়ে’ প্রকাশিত ‘ছাত্রী থেকে বিধবা নারী, তার যৌন নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি কেউ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি প্রভাবশালী হয়ে মানুষের প্রতি নির্যাতনের দুর্ধষ কাহিনী। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, সেই লোকটি মানুষকে চরিত্রের সনদ প্রদান করেন। কিন্তু ঘটনাচক্রে তার চরিত্রেই ঢাকা পড়েছে কালিমার প্রলেপে।

তিনি রিলিফের টোকেন দেয়ার নামে স্কুলের ছাত্রীদের সাথে যৌন হয়রানি করেছেন। সুযোগ পেলে গৃহিণীদেরও ভোগ করেছেন। তাছাড়া বিধবা নারীদের কৌশলে ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতন করেছেন। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকতাও করেছেন। এই ব্যক্তির বিষয়ে জানাজানি থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন স্বপদে বহাল রয়েছেন। তিনি হলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল।

এই ব্যক্তি নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের পর ভাইরালের ভয় দেখিয়ে টানা আট মাস নির্যাতন করেছেন। সেই অভিযোগে ফেসে গেলেন। তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি রিলিফসহ নানা সুবিধা দেয়ার নামে নারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে নির্যাতন করতেন। গ্রেফতার হওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।

এখানে শুধু প্রশ্ন জাগে যে, এতো কিছুর পরও এই মানুষ কী করে একটা স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল থাকেন। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও তার টিকে থাকাটা দুঃসাহসের বলে মনে করি। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর উপজেলা কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্যে কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে বলে জানা গেছে।

আমরা মনে করি, এমন চরিত্রের মানুষ জনপ্রতিনিধি হিসেবে থাকাটা কলঙ্কজনক। এ ধরনের জনপ্রতিনিধি জনগণ কোনোভাবেই আশা করে না। যাদের মধ্যে এমন নোংরামী রয়েছে তারা সমাজের কীট। নোংরা জনপ্রতিনিধি দিয়ে কোনো ভালো কাজ চলতে পারে না। চলতে পারে না কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। এ ধরনের মানুষকে সমাজের এড়িয়ে চলা উচিত। তাহলে সমাজ রক্ষা পাবে। রক্ষা পাবে সমাজের মানুষ। যদি এ জাতীয় মানুষ সব বিষয়ে পার পেয়ে যায় তাহলে সমাজ লজ্জায় মরে যাবে। আমরা চাই, তার আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তি হোক।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

আপডেট সময় : ১২:২০ পিএম

০৩ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৭ রবিউস সানি ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার