শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান!

সম্পাদকীয় …

পড়াশোনা করে মানুষ শিক্ষিত হয়, নৈতিকতা মানব জীবনে জড়িয়ে যায়, জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে, দয়া ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। বিদ্যালয়ে ও কলেজে পড়াশোনা করে কোনো মানুষকে তো এসব হতেই হয়। অন্যথায় পড়াশোনা করে কোনো ফল হয় বলে মনে হয় না। নীতিজ্ঞান অর্জন হয় চর্চার মাধ্যমে। আর তা কারো না কারোর উৎসাহে। সেই উৎসাহেই তো মানুষ সুন্দর পথে সঠিক দিকনির্দেশনা অর্জন করতে পারে।

সেই জ্ঞানকে সঠিক ও উপযুক্ত সময়ে কাজে লাগানোটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। মানুষের পাশে মানুষ কষ্টে থাকলে সেই কষ্ট যদি কারো মনে দাগ কাটে এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? মানবের সেবার জন্যে এগিয়ে যাওয়াই তো হলো মানুষের ধর্ম।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) পঞ্চগড় জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির এক ঝাঁক ছাত্র-ছাত্রী শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষের জন্যে চিন্তা করেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা চেষ্টা করেছে মানুষকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করতে।

প্রিয় সময়ে ‘পঞ্চগড়ে শীতার্তদের পাসে দাড়িয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করলো বেরোবি’র ছাত্র-ছাত্রীরা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ছাত্র-ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের খরচ থেকে বাঁচিয়ে অর্থ জোগাড় করেছে। তারা বিত্তবানদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চগড় জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। তারা ১২০ জন অসহায় শীতার্ত মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছে।

এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, নতুন প্রজন্ম মানবের সেবায় জীবন বিলিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অন্তত এই করোনাকালে মানুষ দারুণভাবে অসহায় জীবনযাপন করছে। মানুষের কাজ বন্ধ, আয় কমে গেছে। অভাবে মানুষ জর্জরিত। অনেকেরই চাকুরি নেই। আর যারা গরীব তারাও করোনার কারণে নির্মম জীবনাযপন করছে। মানুষের বেঁচে থাকার সমস্ত উৎস নষ্ট হয়ে গেছে করোনার কারণে। সেই সাথে আম্ফান ঝড় ও বিভিন্ন স্থানে বন্যায় মানুষকে আরো দুর্বল করে দিয়েছে। অভাবের তাড়নায় মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মানুষের পাশে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।

শীতে কাঁপছে মানুষ। গরীব ও অসহায় মানুষের শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। অন্তত তাদের কথা চিন্তা করে করোনাকালে দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। সেই সব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত আমাদের সকলকে। যদি কারো অর্থনৈতিক ক্ষমতা থাকে তাহলে পাশে থাকা মানুষগুলোকে সাহায্য করা উচিত। ছাত্র-ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা আমাদের সকলকেই অনুসরণ করা উচিত।