স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচন : বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে আওয়ামীলীগ বিএনপি

লড়াই হবে চতুর্মুখী,বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে

মোঃ মাসুদুল আলম অপু, স্বরূপকাঠী প্রতিনিধি :
স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে কঠিন পরিস্থির মোকাবেলা করতে হচ্ছে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মনোনিত প্রার্থীদের। আগামী ৩০ জানুয়ারী ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মাত্র চৌদ্দ দিন বাকী থাকলেও বিদ্রোহীদের বাগে আনতে পারছেনা দলের সিনিয়র নেতারা।

এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ,বিএনপি,জাতীয়পার্টি ও স্বতন্ত্র পরিচয়ে মোট ছয় জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মো: শফিকুল ইসলাম ফরিদ(ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো: নুরুল ইসলাম (লাঙল)। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সহকারি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান খান(টেলিফোন), পৌর যুবলীগের সভাপতি শিশির কর্মকার (জগ) প্রতিক নিয়ে লড়ছেন। এদিকে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (নারিকেল গাছ) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে মাঠ চষে বেরাচ্ছেন। দলের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে আওয়ামীলীগে টেনশন বিরাজ করছে। পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিএনপির কর্মি সমর্থকরা। উভয় দলের আন্ত কোন্দলে মাঠের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

গত ১১ই জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্ধ দেয়ার পর থেকে প্রার্থীরা জোড় গতিতে প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছেন । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনায় মুখর হয়ে ওঠছে পৌর শহরের অলিগলি। বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়ার মত। এবারের স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র কাউন্সিলর পদে মোট ৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। আওয়ামীলীগের গোলাম কবির, একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুর রহমান খান এবং বিএনপির শফিকুল ইসলাম ফরিদ ও বিএনপি পন্থি স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, মাঠে সমানতালে এগিয়ে চলছেন বলে ভোটাররা মনে করেন। ৭নং ওয়ার্ডের সাইদুল ইসালামসহ একাধিক ভোটার জানান, এবারের পৌর নির্বাচনে প্রতীক দেখে নয়, ভোটাররা ভোট দিবেন প্রার্থী দেখে। একাধিক ভোটার সুষ্ঠ পরিবেশ নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেন।

জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির। তিনি বলেন, দলের নেতা কর্মিরা কাধে কাধ মিলিয়ে তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তিনি বলেন,বিগত পাঁচ বছরে তিনি পৌরসভার যে উন্নয়ন করেছেন, পৌরবাসী তার মূল্যায়ন করে তাকে পূনরায় ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সহকারি অধ্যাপক মাহ্মুদুর রহমান খান (মোবাইল ফোন প্রতিক) বলেন, শিক্ষকতা জীবনে অনেক মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। জীবনে কারো উপকার ছাড়া কখনো অপকার করিনি। তাই সেই ভালবাসা নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদি।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম ফরিদ(নির্বাচনী মার্কা ধানের শীষ) বলেন, মানুষ ধানের শীষে ভোট দিতে পারলে তার বিজয় সুনিশ্চিত। তিনি বলেন, যদি ভোটের দিন পর্যন্ত বিএনপি মাঠে থাকতে পারে, তাহলে ৩০ জানুয়ারির পৌর নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হবেন।

উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ (নারিকেল গাছ প্রতিক) বলেন, দল তাকে মনোনয়ন না দিলেও তিনি দলের অসহায় কর্মীসহ দরিদ্র সাধারণ মানুষের খোঁজ খবর রেখেছেন। সে মনবল থেকে তিনি দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেনীর ভোটারদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন।

৪.৯৮ বর্গ কিলোমিটারের আয়তনে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯ শত ২১ জন। এরমধ্য পুরুষ ভোটার সংখ্যা সাত হাজার তিন শত ২৫ এছাড়া মহিলা ভোটার রয়েছে সাত হাজার পাঁচশত ৯৬ জন। ১৯৯৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুুষ্ঠিত হয়।