জাটকা নিধন রক্ষা কার্যক্রমের অভিযান অব্যাহত থাকুক

সম্পাদকীয়

জেলেদের লজ্জা নেই, অথবা তাদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ও জেল হওয়া সত্ত্বেও উচিত শিক্ষা হয় না। ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’; কিন্তু যেখানে লজ্জা মরে যায়, সেখানে সততার বিষয়টির মৃত্যু ঘটে। আর সততার মৃত্যু ঘটলে তো লজ্জা নামক শব্দটি বিবেকে থাকবেই না। হয়তো এজন্যেই মানুষ বারবার একই অন্যায় করতেও দ্বিধাবোধ করে না। চাঁদপুরের জেলেদের অবস্থাও তেমন হয়েছে। সেদিকটি চিন্তা করে জাটকা নিধন অভিযান অব্যহতই রাখা উচিত। সেই সাথে জেলেদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর হওয়া দরকার। অন্যথায় চুপিসারে জাটকা নিধন চলতেই থাকবে।

প্রিয় সময়ে ‘চাঁদপুরে ১২শ কেজি জাটকা জব্দ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি জেলেদের নির্লজ্জতার কথা। তাদের আচরণ এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে যে, তাদেরকে শায়েস্তা করতে হলে প্রশাসনকে আরো কঠোর হওয়া ছাড়া কোনো গতি আছে বলে জানা নেই। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হয় যে, জাটকা যতদিন না বড় হবে ততদিন তাদেরকে ধরা পড়ার পর থেকে জেলে বন্দী করেই রাখা উচিত। ছেড়ে দিলেই, তারাই আবার নদীতে যাবে জাটকা নিধনের জন্যে। অথবা তাদেরকে সেই সময়ে ভিন্ন কোনো কাজের সন্ধান করে দেয়া যেতে পারে, যদি সেটা সম্ভব হয়।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশন কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ১২শ’ কেজি জাটকাসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এসময় একটি পিকআপ ও ১ টি সিএনজি জব্দ করা হয়।’ ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তক প্রত্যেককে পৃথক পৃথক অর্থদÐ প্রদান করা হয়। আটককৃতদের বিভিন্ন অংকের ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ‘আটককৃতরা হলেন-জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০) মোঃ মনির হোসেন (৩৪) মোঃ নূর মোহাম্মদ (৩৪) মোহাম্মদ ফজল খান (৫৫) মোঃ সুমন (৩২) শওকত আলি সর্কার (৪৮)। পরে আটককৃত জাটকা স্থানীয় এতিমখানায় ও দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।’ বোধ করি এটা ভালো কাজ হয়েছে।

সরকার কর্তৃক নির্দেশিত সময়ে জাটকা সম্পর্কিত বিষয়ে বাজারেও সতর্ককতা অবলম্বন করা দরকার বলে মনে করছি। সেটি হলো, বাজারে যাতে জাটকা বিক্রি না হয় সেদিকে নজর দেয়া উচিত। এ বিষয়ে বাজার কমিটিও দারুণভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। তাদের নজরদারি কঠোর হলেও বাজারে জাটকা বিক্রির চেষ্টা ব্যহত হবে। সেই সাথে যারা জাটকা ক্রয় করে তাদেরকেও নিজ উদ্যোগে সতর্ক থাকতে হবে। সুতরাং বাজারে জাটকা বিক্রেতা ও ক্রেতা না থাকলেও জাটকা নিধন বন্ধ হবে। অপরদিকে যারা জাটকা বিক্রি তাদেরকে আরো কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

সেই সাথে যারা জাটকা ক্রয় করবে তারাই বা কেন শাস্তি থেকে বাধ যাবে? বোধ করি, যারা জাটকা ক্রয় করবে তাদেরকেও শাস্তি দিতে পারলে-উভয় থেকে শায়েস্তা হবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাটাও সেই সাথে করা যায়। তাছাড়া সরকার নির্দেশিত সময়ে কোস্টগার্ডের জাটকা নিধন রক্ষা কার্যক্রম অভিযানও অব্যাহত রাখতে পারলে জাটকা রক্ষা করা সম্ভব হবে।