লকডাউন বাস্তবায়নে আরো সাবধানী হওয়া উচিত

সম্পাদকীয়

বর্তমানে সারাদেশে লকডাউন করোনা ভাইরাসের কারণেই হচ্ছে। আর এর কারণে নানামুখী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষজন। মানুষের যাতায়াত বন্ধ হচ্ছে, ফলে মানুষ একস্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারছে না ও কাজের সাথে জড়িত হওয়ায় তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদেরও ব্যবসার দারুণ ক্ষতি হচ্ছে। সুতরাং ক্ষতি শুধু একজায়গাতেই থেমে নেই নানান দিকে মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তবে এসবই আমাদের বেঁচে থাকার জন্যে।

আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, আমরা যেন বেঁচে থাকতে পারি, আমরা যাতে মৃত্যুমুখে না পড়ি সেজনেই সরকার লকডাউন দিতে বাধ্য হচ্ছে। কেননা প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, সেই সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও গুণতে হচ্ছে। এ সমস্যা সারা বিশে^ই চলমান রয়েছে। ফলে সারাবিশ^ই ক্ষতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
‘চারিদিকে মানুষজন আতঙ্কিত’ যদি একথা বলা যায়, তাহলে মানুষ কেনো লকডাউন মানতে চাইছে না। আসলেই যারা অসচেতন তারাই লকডাউন মেনে নিতে চায় না।

প্রিয় সময়ে ‘দোহারে লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়নে অভিযান’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, যেন মানুষ লকডাউন মেনে নিতে পারে ও সচেতন হতে পারে সেজন্যে সচেতন করা হচ্ছে। লক্ষ্য করা গেছে, অনেকে লকডাউন মানছে না; ফলে ‘সারাদেশ যখন লকডাউন পালন করায় ব্যস্ত; ঠিক তখনই ঢাকার দোহারে লকডাউনের প্রথম দিনে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।’ আমরা জানি, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ৫ এপ্রিল হতে ১১ ই এপ্রিল পর্যন্ত সরকার কর্তৃক ঘোষিত লকডাউন দেয়া হয়েছে সারাদেশে। সে লক্ষ্যে ৫ই এপ্রিল রোজ সোমবার সকাল হতে সারাদিন মাঠে ছিল দোহার উপজেলা প্রশাসন ও দোহার থানা পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, শারীরিক দূরত্ব¡ বা স্বাস্থ্যবিধি মানতেই চাইছে না কেউ কেউ। বাজারের দোকানী হতে শুরু করে ক্রেতারাও শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না।

ঠিক অভিযানের সময় প্রশাসনকে দেখলেই মানুষজন দোকানপাট চোখের পলকে বন্ধ করে। আবার প্রশাসন চলে ঠিকই দোকান পাট খোলা হয়। এ যেন এক লুকোচুরির খেলার মতো। অবশ্যই নিত্যান্তই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। কিন্তু দেদারছে মানুষ ইচ্ছামতো রাস্তায় বের হচ্ছে। মানুষ যেন বাড়িতে এক দণ্ড থাকতেই চাইছে না। রাস্তায় বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলেও তারা সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারে না।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ‘অকারণে বাসা থেকে বের হওয়ার দায়ে ১৪ জনকে চার হাজার দুইশত টাকা জরিমানা করা হয়।’ আমরা মনে করি, এটা যৌক্তিক হয়েছে। যেন মানুষ আরো বেশি সচেতন হতে পারে। কেননা লক্ষ্য করা গেছে যে, লকডাউনের কথা শুনে সাধারণ মানুষ বাইরে বেশি বের হয়েছে। এসব কারণেই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রশাসন তথা সরকার চাইছে, যেন শতভাগ লকডাউনের আওতায় আনতে পারে।

প্রিয় সময়ে ‘মতলবে বিভিন্ন স্হানে অভিযানে ১৭ জনকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদেও আমরা জানতে পেরেছি, মতলবে জরিমানা করা হয়েছে। মতলবে লক্ষ্য করা গেছে ব্যবসায়ীরা লকাউন অমান্য করছে বেশি। এজন্যে ১৭টি মামলা হয়েছে ও ১৬ হাজার ৩শত টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৫ এপ্রিল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রথম শ্রেনির নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফাহমিদা হকের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, লকাউনের কথা শুনলে কিছু জনসাধারণের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তারা কোনোভাবেই লকডাউন মানতে চায় না। তারা তাদের ইচ্ছেমতো রাস্তায় বের হবে, ও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এসব অবাধ্য মানুষদের কথা চিন্তা করে প্রশাসনকে আরো কঠোর হওয়া দরকার বলে মনে করি। অন্তত বেঁচে থাকার বাসনায় যারা রয়েছে সেই সব শান্তিপ্রিয় মানুষের কথা ভেবে লকডাউন বাস্তবায়নে আরো কঠোর হওয়া উচিত বলে মনে করছি।