মাদারীপুরে যে কারণে খুন করা হয় কৃষক দম্পতিকে

মাদারীপুরের কালকিনিতে আলোচিত স্বামী-স্ত্রী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার একমাত্র আসামি আশরাফুল মোল্লা (৩৯) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেনের আদালতে জবানবন্দি দেয় আশরাফুল। পরে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে নড়াইলের সদর উপজেলার শৈলপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গোপালগঞ্জ জেলার একটি টিম। গ্রেফতার আশরাফুল নড়াইল সদর উপজেলার মধ্যপল্লী এলাকার আকবর মোল্লার ছেলে।

পিবিআই গোপালগঞ্জ জেলার এসআই শেখ আল আমিন জানান, সম্প্রতি কৃষি কাজ করতে অপরিচিত কয়েকজন যুবক কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের সস্তাল গ্রামে আসে। পরে ওই এলাকার এক কৃষকের মেয়ের দিকে কুনজর পড়ে আশরাফুলের। এতে বাঁধা দেন মোয়াজ্জেম সরদার ও তার স্ত্রী মাকসুদা বেগম কৃষক দম্পতি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে আশরাফুল। গত ৪ এপ্রিল প্রথম ওই কৃষককে ডেকে নিয়ে তোয়ালে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়। পরে তার স্ত্রীকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে একইভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আশরাফুল।

এসআই বলেন, গত ৪ এপ্রিল নিখোঁজ হন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের সস্তাল গ্রামের মোয়াজ্জেম সরদার ও তার স্ত্রী মাকসুদা বেগম। নিখোঁজের ৪ দিন পর গত ৯ এপ্রিল রাজারচরের শুকিয়ে যাওয়া একটি খালের ভেতর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মামলাটির দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআই। তথ্য প্রযুক্তির সহয়তায় ঘটনার ১৩ দিন পর নড়াইল থেকে এই ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী আশরাফুলকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এ সময় নিহত স্বামী-স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।

পিবিআই জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অপরাধ করে আশরাফুল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণার একাধিক মামলা রয়েছে। কৃষক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শুধু তাদের মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওই দম্পতিকে হত্যার পরে রাতে তাদের মেয়ের সঙ্গে জোরপূর্বক একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে ভোরে পালিয়ে যায় আশরাফুল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুধু আশরাফুল একাই জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।