মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে

সম্পাদকীয় ….
মাদক আমাদের সমাজকে নষ্ট করছে। নষ্ট করছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। একটি পরিবারকে জ¦ালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে ফেলছে। অথচ আমরা মাদকের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছি না। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মানুষ এটিকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের সহযোগিতা করছে কুচক্রি মহল। যাদেরকে আমরা বলি রাঘব বোয়াল। তাদের থেকে আমরা কোনোভাবেই নিজেদের বাঁচাতে পারছি না। বাঁচাতে পারছি না আমাদের যুব সমাজকে।

আমরা মনে করি, শুধুমাত্র যুব সমাজই মাদকের সাথে সরাসারি যুক্ত। এটা ঠিক ও অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু বয়সে বড় ও সংসার ধর্মী মানুষও জীবিকার তাগিদে এই মাদকের সাথে জড়িয়ে আছে।

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘নবাবগঞ্জে ৩ মাদক ব্যবসায়ী আটক’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি বাস্তব উদাহরণ। কিন্তু কেনো? সবই লোভ ও লালসার কারণে। আর এদের মাধ্যমেই চারিদিকে ছড়িয়ে যায় মাদক নামক মরণ নেশা। ধরা পড়লে হয়তো কিছুদিন তাদের শাস্তি হয়। কিন্তু তারাই আবার আগের মতো একই কাজ শুরু করে দেয়। প্রশ্ন হলো-কারা তাদের মদদ দেয়? পুনরায় একই কাজ করতে কারা তাদের সহযোগিতা ও সাহস দেয়?

এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। অথবা তারা যখন ধরা পড়ে তাদের শাস্তির পরিমাণটা কি হালকা হয় কিনা-যার কারণে তারা পুনরায় একই কাজ করতে সাহস পায়? কী হবে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় তিন জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। আবার আটককৃতদের সাথে দুই কেজি গাঁজা ও নগদ ৮১ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এখন তাদের শাস্তি কী হতে পারে? যেন আমাদের সমাজ থেকে মাদক নামক মরণনেশা আর না আসতে পারে?

আমরা ২৭ মে বৃহস্পতিবারের প্রকাশিত সংবাদে জানতে পারলাম আটককৃতরা হলো একই পরিবারের। তারা হলো-নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা চরকান্দি গ্রামের কিতাব উদ্দিনের ছেলে ঈমান আলী (৬০), ঈমান আলীর স্ত্রী পারভিন বেগম (৫০) ও মেয়ে ইরিন জামান (২০)। অর্থাৎ একটি পরিবার সরাসারি এই কাজের সাথে জড়িত হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো-নিজের স্ত্রীকেও এই জঘন্য কাজে যুক্ত করেছে। এরচেয়ে দুঃসাহসের ও দুঃখজনক কাজ হলো-নিজের যুবতী মেয়েকেও একই কাজে জড়িত করেছে। অবশ্য পাঠকদের দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে যে, একটি যুবতী মেয়েকে এমন কাজে জড়িত করা কতটা বোধগম্য হলো! এ কারণে পাঠকের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে নিশ্চয়!

আমরা জানতে পেরেছি, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবশ্য এটা ভালো কথা-যদি তা বাস্তবে ঔষধের মতো কাজ করে। তবে এর মধ্যেও কিন্তু থেকে যায়-তারা শাস্তি পাওয়ার পর আবার একই কাজ করবে কিনা? অথবা শাস্তিটা দৃষ্টান্তমূলক হবে কিনা?

তবে মাদককে ‘না’ করতে হলে রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিকল্প নেই। মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে সমাজের প্রতিটি মানুষকে, প্রতিটি পরিবারকে। অন্যথায় মাদকের রোষানলে আমাদের সমাজের সমূহ ক্ষতি বর্তমানে যেভাবে বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে আমরা রুখে দাঁড়াতে পারবো না মোটেও। সুতরাং এখনই সময় মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।