ফার্মেসীর আড়ালে অবৈধ প্যাথলজি বাণিজ্য!

সম্পাদকীয় …

অবৈধ পথে পা বাড়াতে কিছু ব্যবসায়ীরা সিদ্ধহস্ত। আড়ালে আবডালে তারা দুঃসাহসের সাথে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যায় দিনের পর দিন। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো যেন কেউ নেই। অন্যথায় তারা এতো সাহস পায় কোথা থেকে?-এমন প্রশ্ন মনে জাগাটা একেবারেই স্বাভাবিক নয় কী! তাছাড়া কিছু অসাধু ব্যক্তিরা তো তাদের প্রশ্রয় দিয়েই চলেছে। এ কারণে তাদের দুঃসাহস দিনের পর দিন বেড়েই চলে। তারা কোনো কিছুকেই ভয় পায় না। ফলে তারা ব্যবসা চালিয়ে যায় মানুষের দৃষ্টি সীমার মধ্যেই।

প্রিয় সময়ে ‘হাজীগঞ্জে ফার্মেসীর আড়ালে চলছে অবৈধ প্যাথলজি বাণিজ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি হাজীগঞ্জের ফার্মেসীগুলোর কুকীর্তি সম্পর্কে। ফার্মেসীর আড়ালে অবৈধ প্যাথলজি বাণিজ্য কতোটা নিরাপদ ও জনসাধারণের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ! আর সেসব ফার্মেসীতে করা হচ্ছে রক্ত পরীক্ষাসমূহ রিপোর্ট। এটা কতোটা গ্রহণযোগ্য জনসাধারণের জন্যে?
আমরা জানি, প্যাথলজি বাণিজ্য করতে হলে সরকারি অনুমোদন অবশ্য দরকার। সুতরাং অনুমতি না নিয়ে এমন বাণিজ্য করাটা বেআইনী। উপরন্তু ফার্মেসীতেই একজন কর্মচারী দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করাটাতো রীতিমতো দুঃসাহসের।

প্যাথলজি বাণিজ্য করতে হলে সেখানে যেমন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকবলের দরকার হয়; তেমনি দরকার হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জামাদি। এছাড়াও যদি এমন হয় যে, যার নেই কোন নুন্যতম প্রাথমিক শিক্ষা। ফার্মেসীর আলমীরাতে ওষুধ সাজিয়ে রেখে মাত্র একটি কম্পিউটার বসিয়ে প্যাথলজি পরিচালনা করাটা কোনোমতেই মেনে নেয়া যায় না। তাছাড়া ফটোকপি মেশিন রেখে অন্য ব্যবসা করাটাও রীতিমতো হাস্যকর। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে হয়তো, মুদি দোকানেও ডাক্তারী পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে না?

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ‘– তুলি ফার্মেসীর ভিতর যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, আর সেখানে বসেই দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাডে তৈরি করে দেয়া হচ্ছে রিপোর্ট।’ এটাই বা কতটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে? আবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই বছর আগেই দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে।

এটা সবচেয়ে ভালো হবে যে, যদি এ ধরনের কোনো ফার্মেসী থাকে তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা উচিত। যেন এসবের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এ ধরনের ফার্মেসীকে অনিয়মের তালিকায় নিয়ে আসা উচিত। আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনেছি, ‘–তার ভুলের জন্য অনুশোচনা করে বলেন, তিনি আর কখনো এই ফার্মেসীতে এমন অবৈধ কাজ করবেন না।’

এ রকম অস্বীকারোক্তি অবৈধ প্যাথলজি পরিচালনাকারীদের মুখ থেকে বের করানো উচিত ও দ্রæত সতর্ক করে দেয়া উচিত। সেই সাথে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।