কুমিল্লায় আটকে পড়া ৪৩ শ্রমিককে বাড়ি পাঠালেন এসপি

জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা :

কুমিল্লায় কাজ করতে এসে করোনায় আটকে পড়া ৪৩ শ্রমিককে বাড়িতে স্বজনদের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

এসব শ্রমিকদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। দুই থেকে আড়াই মাস আগে কর্মের খোঁজে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তারা কুমিল্লায় এসেছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কুমিল্লা শাসনগাছা ফ্লাইওভারের পশ্চিম অংশ থেকে ওই ৪৩ শ্রমিককে নিয়ে একটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, করোনার কারণে লকডাউনের আগে ও পরে সকল ধরণের কর্মক্ষেত্র বন্ধ হয়ে পড়ায় এই শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। এছাড়াও যানবাহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ না যেতে পেরে কুমিল্লায় তারা আটকা পড়েন।

পুলিশের এই মানবিক উদ্যোগ প্রসঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিক রমিজ মিয়া, মো. মোস্তফা , পলাশ, তৈহিদ, শফিকুল ইসলাম ও লোকমান আলী জানান, তারা দুই মাস আগে কুমিল্লায় কাজের সন্ধানে এসেছেন। ১৫/১৬ দিন কাজ পেয়েছেন। হঠাৎ করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েন। যতদিন কাজ করেছেন জমানো টাকা বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফলে তারা খাওয়া-দাওয়া ও বাসা ভাড়া নিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েন। পরবর্তীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্তান কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের কাছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য সহযোগিতার আবেদন করলে তিনি এই ব্যবস্থা করে দেন।

শ্রমিকরা বলেন, কর্মহীন ও আটকে পড়া শ্রমিকদের বাড়ি পাঠাতে কোনো পুলিশ সুপার বাসের ব্যবস্থা করে নিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে বাস না ছাড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন এটা কখনোই ভাবিনি। আমরা পুলিশের সহযোগিতায় বাড়িতে নিজের স্ত্রী ও সন্তানের কাছে ফিরতে পারছি এটা মহা আনন্দের। তারা জেলা পুলিশের এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

শ্রমিকরা গাড়িতে ওঠার সময় সেখানে উপস্থিত কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, আটকে পড়া শ্রমিকদের বাড়িতে যাওয়ার অর্থ কিংবা যানবাহন কোনোটাই ছিল না। তাই মানবিক কারণে তাদেরকে স্বজনদের নিকট পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা পুলিশের সকল কর্মকর্তা ও সদস্য ভয়াবহ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনগণের পাশে রয়েছে এবং থাকবে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, নাজমুল হাসানসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।