নাসিমের মৃত্যু নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষিকার পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন

নিউজ ডেস্ক :
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেয়ার ঘটনায় করা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের প্রভাষক সিরাজাম মুনিরার রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

রোববার (১৪ জুন) আদালতে তার পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। এর আগে দুপুরে শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরাকে আদালতে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মুহিব্বুল ইসলাম।

মুহিব্বুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরাকে রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়ার দাখিলকৃত এজাহারটি সম্পূরক হিসেবে রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তার পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করেছি। আগামীকাল সোমবার (১৫ জুন) ভার্চুয়াল আদালতে সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এ বিষয়ে শুনানি হবে। সেই সঙ্গে আজ বিকেলের মধ্যে ওই শিক্ষিকাকে জেলে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত।

শনিবার (১৩ জুন) লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। তার মৃত্যু নিয়ে ওই শিক্ষিকা ‘যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হল’ লিখে পোস্ট দেন।

কিছুক্ষণের মধ্যে বিষয়টি সবার নজরে এলে পোস্টটি মুছে দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে পোস্টের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে শিক্ষিকার শাস্তি চেয়েছেন।

এ অবস্থায় ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দিয়ে আগের পোস্টের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন প্রভাষক সিরাজাম মুনিরা। সেই সঙ্গে এমন পোস্টের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত তিনি।


পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্নভাবে অভিমত ব্যক্ত করা ঠিক নয়। কর্মফল যাই হোক না কেন; মৃত্যু সবসময় বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক। এটি অনুধাবনের পরপরই আমি আমার বক্তব্য থেকে সরে এসেছি। সেই সঙ্গে আমার আগের দেয়া পোস্ট সরিয়ে নিয়েছি। তারপরও যারা আমার পোস্টে আঘাত পেয়েছেন; তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’

একই দিন রাতে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তফা কামালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় শনিবার রাত ১২টার দিকে ওই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করে তাজহাট থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোন্নাফ আল কিবরিয়া তুষার বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমি মামলার এজাহার শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় জমা দিয়েছি। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ওই শিক্ষিকাকে থানায় আনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন এসে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়। পরে রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।