ওরা সমাজের পোকা

সম্পাদকীয়….

সমাজে কিছু মানুষ রয়েছে, সুকৌশলে মানুষের ক্ষতি করে। মানুষকে ফাঁদে ফেলে মানুষের জীবন ধ্বংস করে। মানুষের অস্তিত্বকে বিলীন করে দেয় ও জীবনকে করে তোলে ক্ষতবিক্ষত। ওরা মুখোশের আড়ালে দুষ্টতার জাল বিছিয়ে রাখে। আর সেই জালে ধরা পড়ে দিশেহারা হয়ে যায়। তখন তাদের কিছুই করার থাকে না। দুষ্টতার ফাঁদে বন্দী হয়ে তাদের মতো করেই চলতে হয়। তাদের খেলার পুতুল হয়ে চলতে হয়। যখন যেভাবে বলবে সেভাবেই চলতে হবে।

প্রিয় সময়ে ‘ডেলিভারি বয় ফাঁদে ফেলে ৬৬ নারীকে ধর্ষণ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে আমরা জানতে পেরেছি লোমহর্ষক ঘটনাটি। যে ঘটনায় স্পষ্ট হয় যে, কীভাবে একজন দুষ্ট লোক নারীদের ফাঁদে ফেলে তাদের ভোগ করতো। আর নারীরাও তার লোভের ফাঁদে পড়ে গিয়ে বিপদগ্রস্থ হতো। সেই দুষ্ট লোক অন্তত ৬৬ জন নারীকে এ পর্যন্ত ধর্ষণ করেছে। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে ঘটেছে। অনলাইনে কেনাকাটার ডেলিভারী বয় যে এভাবে মহিলাদের ফাঁদে ফেলতে পারে তা’ অত্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার মতোই বিষয়। অভিযুক্ত লোকটির নাম বিশাল বর্মা। তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবর মারফত জানা গেছে অনলাইন বিপণির ডেলিভারি বয় পণ্য পৌঁছে দেয়ার পর ফিডব্যাক নেয়ার নামে নারীদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখতো। এরপর বিভিন্ন ছলচাতুরীর মাধ্যমে ও কৌশলে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতো। পরে বিভিন্ন সময়ে ভিডিও কল করে নানা মুহূর্তের ছবির স্ক্রিনশট জমিয়ে রাখতো। আর সুযোগ বুঝে সেই সব ছবি দেখিয়ে নারীদের বেøকমেইল করে ধর্ষণ করতো।

ধরা পরার পর সম্প্রতি চুঁচুড়ার এক গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশালের ধর্ষণের ঘটনা জানা গেছে। সেই নারী অভিযোগ করেছে, ফাঁদে ফেলে বিশাল তাকেও ধর্ষণ করেছে। সে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মহিলার গয়নাও হাতিয়ে নিয় গেছে। সেই অভিযোগকারী মহিলার দাবি, বিশাল সেই সময় তাকে জানিয়েছে, সে তার ৬৬তম ‘শিকার’। ধরা পরার পর বিশালের মোবাইলে এবং বেশ কিছু মাইক্রোচিপে অসংখ্য নারীর ছবি এবং ভিডিও পাওয়া যায়। সে থেকে প্রমাণিত হয় যে, এই বিশাল কতটা বীভৎস্য ও জঘন্য মানসিকতার মানুষ।

সমাজের এ ধরণের মানুষের মানবতা থাকে না। তাদের বুকপীঠও থাকে না। নীরবে নিভৃতে মানুষের ক্ষতি করলেও তাদের মায়ামমতা মোটেও জেগে উঠে না। ফলে তারা নিকৃষ্ঠতম কাজ করতেও দ্বিধা করে না। তারা মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে ফেলে। ফলে আরো জঘন্য কাজ করতেও তারা কার্পণ্য করে না। তাদের হৃদয় মোটেও কেঁপে উঠে না।

এ জাতীয় নিকৃষ্ট মানুষ সমাজের পোকা। তারা মানুষকে ভালো কাজ করতে দেয় না। ভালোভাবে বাঁচতেও দেয় না। আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, বিশাল নামে এই পোকা কতোটা কৌশল খাঁটিয়ে ৬৬ জন নারীকে কষ্ট দিয়েছে। যেহেতু সে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সেহেতু তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তাহলেই সমাজের পোকাগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।