মাদারীপুরের শিবচরে গাছে গাছে দুলছে রক্তবর্ণা ‘জামরুল’

মাজহারুল ইসলাম (রুবেল), স্টাফ রিপোর্টারঃ

মধুমাস কড়া নাড়ছে দুয়ারে। জৈষ্ঠ্য মাসে পাকা আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, তরমুজ, ডেউয়া, লটকন, কালো জাম, গোলাপ জাম, বেতফল, গাব, জামরুল, আতাফল, কাউ, শরীফাসহ নানা ফল আসা শুরু হতে থাকে। মধুর স্বাদের হরেক ফল। মধু স্বাদের ফল পাওয়া যায় বলে কেউ কেউ এই মাসের নাম দিলেন ‘মধু মাস’।

আর কিছুদিন পরই আমাদের দেশি ফলগুলো ধীরে ধীরে বাজারে এসে পুরোপুরিভাবে জড়ো হতে শুরু করবে। জমে উঠবে দেশি সতেজ ফলের বাজারও। স্বাস্থ্যকর ‘জামরুল’ এসব ফলের মধ্যে অন্যতম।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে যেন এক প্রকার প্রকৃতি দিয়ে যেন সাজানো হয়েছে। গাছের ডালে ডালে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিচ্ছে ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ, লাল, সবুজ আর সাদা রঙের তরতাজা জামরুল। রঙের তীব্র আকর্ষণে ফলটির দিকে বারবার চোখ ফেরাতে বাধ্য করে। গ্রীষ্মকাল হলো এ ফলের মৌসুম। মাঝারি আকারের গাছগুলোর থোকায় থোকায় ধরেছে জামরুল। ফলটি দেখতে অনেকটা ঘণ্টাকৃতি। এটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এর গুণাবলীও অনেক।

সরজমিনে দেখা গেছে, শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ফলবাজার, অলি-গলি আর ছোট-বড় বাজারগুলোতে জামরুল বিক্রি হচ্ছে। হালকা মিষ্টি স্বাদের ফলটি অনেকেরই প্রিয়। তবে অনেকই বলেন, জামরুল খেতে পানসে হয়। এরপরও ভিন্ন স্বাদ পেতে জামরুল কিনতে ফলের দোকানে ভিড় করছেন মানুষ।

স্বাদ প্রসঙ্গে অপূর্ব জয় বলেন, ‘এটি দারুণ রসালো। খেতে সাদা-জামরুলের মতোই। প্রচুর পানি এবং হালকা মিষ্টি। বছরে দু’বার ফল ধরে।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম রায় বলেন, গ্রীষ্মকালে এ ফলটির কদর বেশি। জামরুল ফলের মিষ্টতা বেশি না হলেও এই ফলটি খেতে সুস্বাদু। জামরুলের নিজস্ব একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে। জামরুলের উপকারীতা অনেক। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, ভিটামিট-সি ছাড়াও ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান বিদ্যমান। শরীরের পানিশূন্যতা সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ করে।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, শরীরের নানা ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে জামরুলের জুড়ি নেই। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। ভিটামিন সি ও ফাইবার সমৃদ্ধ জামরুল হজমশক্তি বৃদ্ধি ও বদহজম দূর করে। জামরুলে থাকা উপাদান শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া জামরুল ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও শরীরের বাত নিরাময়ে দারুণভাবে কাজ করে।