সাবধান, করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুও বাড়ছে

সম্পাদকীয়

করোনার রেশ এখনো কাটেনি। ভয়-আতঙ্ক এখনো বিরাজ করছে অনেক জায়গায়। কেননা মৃত্যুর সংখ্যা ইদানিং বেড়ে চলেছে। সেই সাথে আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ইতিমধ্যে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও বেড়ে চলেছে। এ যেন ‘মরার উপর খড়ার ঘা’। এরই মধ্যে আমরা ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলার অনেক প্রমাণ পেয়েছি। আমরা জানি, মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে রোগীদের রাখা হয় মশারির ভেতরে। এক দিনে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

জানা যায়, খোদ রাজধানীতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। অন্যদিকে সমানতালে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি ছিল। সুতরাং আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করা। জানা যায়, জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। করোনা অথবা ডেঙ্গু-দুটোতেই মানুষ বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছেন। সেজন্যে কেউ কোনোটাতেই ঝুঁকি নিতে চান না। ফলে ঝুঁকি না নিয়ে কেউ কেউ একই সঙ্গে ডেঙ্গু ও করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন।

জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, ‘গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এ বছর ঢাকা শহরে মশার প্রকোপ বেশি। চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৩৫২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর চলতি মাসের ২৮ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন। যদি থেমে থেমে বৃষ্টি হয়, অর্থাৎ দু-তিন দিন বৃষ্টি, তারপর দু-তিন রোদ থাকলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে জনস্বাস্থ্যবিদেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

অপরদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপটা এমন সময় বাড়ছে, যখন করোনা সংক্রমণও বাড়তির দিকে। সংবাদ মাধ্যমে আমরা জেনেছি, ‘সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৭ জন করোনায় আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এই সময় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।’ যা অত্যন্ত দুঃখজনক!

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সামনে ঈদুল আজহা। হাটবাজারে, রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়বে। এই সময় দুটি রোগই আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে। ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। কেননা করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রামক ব্যাধি। যেন মানুষের আনন্দ মাটি হয়ে না যায়। আমরা মনে করি, ডেঙ্গু ও করোনায় মানুষ যেন আক্রান্ত না হন, সে ব্যাপারেও জোর প্রচারণা চালাতে হবে। পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে। তবে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করা খুবই দরকার।