জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আমলসমূহ কি?

হাকীম মো. মিজানুর রহমান রানা:

যারা কাফের তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন :
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মত্যুর আদেশও দেওয়া হবে না যে, তারা মারে যাবে এবং তাদের শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি। সেখানে তারা আর্তচিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করবো, পূর্বে যা করতাম, তা’ করবো না। আল্লাহ্ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিলো। অতএব আস্বাদন কর। জালেমদের জন্যে কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সূরা আল ফাতির : আয়াত ৩৬-৩৭)

পৃথিবী হলো একটা পরীক্ষাক্ষেত্র। এখানে আল্লাহতায়ালা নির্দিষ্ট একটা বয়স পর্যন্ত মানুষকে হায়াত দান করেছেন। এখানে মানবজীবনে

পরীক্ষায় যিনি সম্পূর্ণ উত্তীর্ণ হবেন তিনিই বেহেস্তের সার্টিফিকেট পাবেন। আর যিনি পৃথিবীর মাঝে আল্লাহতায়ালার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারবেন তিনি পরকালে পাবেন শাস্তি।

আল্লাহতায়ালা বলেন : ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই: মাঝে মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও। [আল-বাক্বারাহ ১৫৫]

আল্লাহ আমাদেরকে এই দুনিয়াতে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষা নেবেনই, নেবেন। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি আরবিতে দুই বার জোর দিয়ে এ কথা বলেছেন। কারো বেলায় সেই পরীক্ষা হয়তো চাকরি হারিয়ে ফেলে অভাবে, কষ্টে জীবন পার করা। কারো বেলায় হয়তো বাবা-মা, স্বামী, স্ত্রী, সন্তানদের জটিল অসুখের চিকিৎসায় দিনরাত সংগ্রাম করা। কারো বেলায় হয়তো নিজেরই নানা ধরনের জটিল অসুখ। কারো বেলায় আবার জমি-জমা, সম্পত্তি নিয়ে আত্মীয়স্বজনদের সাথে শত্রæতা, শ্বশুর-শাশুড়ির অত্যাচার, দুশ্চরিত্র স্বামী, পরপুরুষে আসক্ত স্ত্রী, ড্রাগে আসক্ত ছেলে, পরিবারের মুখে কালিমা লেপে দেওয়া মেয়ে। কোনো না কোনো সমস্যায় আমরা পড়বোই। এই সমস্যাগুলো হচ্ছে আমাদের জন্য পরীক্ষা।

প্রতিটি মানুষই পৃথিবীতে আসে গুনাহ বা পাপ মুক্ত হয়ে। পরবর্তীতে তাঁর জ্ঞান, আমল-আখলাক অনুযায়ী তিনি পরকালের ঠিকানা বেছে নেন। যদি আল্লাহতায়ালার কোনো বান্দা তাঁর জ্ঞান বা এলম অনুযায়ী আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে সঠিক পথে চলেন এবং সে অনুযায়ী আমল করেন তাহলে তিনি আল্লাহর প্রিয়পাত্র হন। মহান আল্লাহতায়ালা সেই বান্দার দুনিয়া ও আখেরাতের পথকে আরো সুন্দর করে দেন। আর যিনি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী না চলেন সেই বান্দাকে আল্লাহতায়ালা দুনিয়া ও আখেরাতের পথকে কণ্টকাকীর্ণ করে দেন।

আল্লাহতায়ালার আদেশ ও নিষেধ না মানার কারণে বান্দা জাহান্নামের পথ তৈরি করে নেয়। আমরা অবশ্যই আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানবো। সেই অনুযায়ী আমরা দুনিয়া ও আখেরাতের পথে ধাবিত হবো। তাই আমাদেরকে জানতে হবে কি আমল করলে আমরা জাহান্নামের পথ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। আসুন আমরা জেনে নেই :


গীবত থেকে দূরে থাকা
গীবত একটি ভয়ানক ব্যাধি। এতে সামাজিক পারিবারিক ক্ষতি সাধিত হয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাই অন্যের দোষ-ত্রæটি পেছনে আলোচনা-সমালোচনা না করার বিষয়ে বলেছেন। কারণ তাতে মানুষের আমল বরবাদ হয়ে যায়।


এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সূরা হুজরাতের ১২ নম্বর আয়াতে বলেন :
وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ
‘আর তোমরা কেউ কারো গীবত করো না, তোমরা কি কেউ আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? একে তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করবে। (সূরা হুজুরাত : ১২)

সুস্থ, স্বাধীন কোনো বিবেকবান মানুষই জ্ঞান অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত মৃত মানুষ তো দূরের কথা, যে পশু জীবিত থাকলে হালাল সেই পশু মৃত হলে তার গোশতও ভক্ষণ করবে না। অথচ মানুষ সুস্থ মস্তিষ্কে, স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে গীবতের মতো জঘন্য ফেতনায় নিমজ্জিত হয়। এতে সমাজে অশান্তি-হানাহানি বাড়ে।

সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
গীবত কাকে বলে, তোমরা জান কি? সাহাবিগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -ই ভালো জানেন। তিনি বললেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তা-ই গীবত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যে দোষের কথা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের থাকে তবে তুমি অবশ্যই তার গীবত করলে আর তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছ। (মুসলিম)
গীবত প্রসঙ্গে আল্লাহ আরো বলেন : وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَة
অর্থাৎ ‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সূরা হুমাজাহ-১)
সুতরাং মুমিন বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্যে এ কাজটি থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

প্রতিদিন তাসবিহ, তাহলিল, তাকবির, তাহমিদ পাঠ করা
প্রতিদিন ৩৬০ বার তাসবিহ, তাহলিল, তাকবির, তাহমিদ আদায় করা। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আদম সন্তানের মধ্যে প্রত্যেক মানুষকে ৩৬০ গ্রন্থির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে। আর প্রত্যেক গ্রন্থির পক্ষ থেকে প্রদেয় সদকা রয়েছে। সুতরাং যে ব্যক্তি ‘আল্লাহ আকবর’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বললো; মানুষ চলার রাস্তা থেকে পাথর, কাঁটা অথবা হাড় সরালো কিংবা ভালো কাজের আদেশ করলো অথবা মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করলো, সে ওইদিন এমন অবস্থায় সন্ধ্যা করলো যে, সে নিজকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূর করে নিলো।’ (সহিহ মুসলিম : হাদিস নং-২২২০)।

রাসূল (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর ‘সুবহানাল্লাহ’ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবর ৩৩ বার তারপর ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদীর’ পাঠ করে তাহলে ওই ব্যক্তির সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে, যদিও তা সমূদ্র ফেনা সমতূল্য হয়। (সহিহ মুসলিম : হাদিস-১২৩৯)
আর এ দোয়া না পারলে আরও একবার ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ১০০ পূর্ণ করবে।

৪০ দিন তাকবিরে উলার সাথে সালাত আদায় করা :
রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে সুন্তুষ্ট করার জন্য ৪০ দিন জামাতে সালাত আদায় করবে এবং তাকবীরে তাহরিমা পাবে অর্থাৎ সালাত আরম্ভ হওয়ার সময় উপস্থিত থাকবেÑ আল্লাহ তাকে দুটি জিনিস হতে মুক্তি দেবেন। ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন এবং ২. মুনাফিকি থেকে মুক্তি দেবেন। (সুনানুত তিরিমিজি : হাদিস ২৪১)

অসুস্থ অবস্থায় দোয়া পড়া :
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) এবং আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তাঁরা উভয়েই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর’ বলে, আল্লাহ তার সত্যায়ন করে বলেন, ‘আমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আমি সবচেয়ে বড়’। আর যখন সে বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু’; আল্লাহ তখন বলেন, ‘আমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, আমি একক, আমার কোনো অংশী নেই।’ আর যখন সে বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদ্’ তখন আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, সার্বভৌম ক্ষমতা আমারই এবং আমারই যাবতীয় প্রশংসা’। আর যখন সে বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অয়ালা হাওলা অয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ তখন আল্ল্হা বলেন, ‘আমি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমার প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফেরার এবং সৎকাজ করার বা নড়াচড়ার শক্তি নেই।’ নবী (সা.) বলতেন, ‘যে ব্যক্তি তার অসুস্থ অবস্থায় এটি পড়ে মারা যাবে, জাহান্নামের আগুন তাকে খাবে না।’ (অর্থাৎ সে কখনো জাহান্নামে যাবে না)। (তিরিমিজি : ৩৪৩০)।

বেশি বেশি দান করা :
রাসূল (সা.) বলেন, “তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকা করেও হয়। আর যে ব্যক্তি এর সামর্থ্য রাখে না, সে যেনো ভালো কথা বলে বাঁচে। (সহিহুল বুখারি : ১৪১৩)

১. জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করা : জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার দোয়া – আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ’উযু বিকা মিনান না’র। (আবু দাউদ : ৭৯৩)

২. জোহরের ফরজ নামাজের পূর্বে ৪ রাকআত এবং পরে ৪ রাকআত নামাজ আদায় : জোহরের প্রথম চার রাকআত সুন্নাত, তারপর ৪ রাকআত ফরজ, তারপর ২ রাকআত সুন্নাত ও দুই রাকআত নফল।

৩. মানুষের সাথে সর্বোত্তম ব্যবহার করা : যে রকম ব্যবহার সে নিজের জন্য পছন্দ করে লোকেদের সাথে সেই রকম ব্যবহার করা। (নাসায়ী, ইবনে মাজাহ)

৪. চোখকে পাপ থেকে হেফাজত করা : রাসূল (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন জাহান্নাম দেখেেব না- ১. যে চক্ষু আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, ২. এমন চক্ষু যে আল্লাহর রাস্তায় জেগে থাকে, ৩. এমন চক্ষু যে বেগানা মহিলাকে দেখে নিচু হয়ে যায়। (সিলসিলাহ সহীহাহ : হাদিস ১৪৭৭)
৫. ফজর ও আসর সালাত যথাসময়ে আদায় করা : যারা এই দুই ওয়াক্ত সালাত সঠিকভাবে আদায় করতে পারবে তাদের জন্য বাকি ৩ ওয়াক্ত আদায় করা খুব সহজ।

৬. আন্তরিকভাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর স্বীকৃতি দেয়া : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহকে সুন্তুষ্ট করার জন্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। (মুসনাদে আহমাদ : হাদিস ১৬৪৮২)

৭. কন্যা সন্তানদের ভালোভাবে লালন-পালন করা : হযরত আয়েশা (রা.) হবে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি একাধিক কন্যা নিয়ে সঙ্কটাপন্ন হবে, তারপর সে তাদের প্রতি যথার্থ সদ্ব্যবহার করবে, সেই ব্যক্তির জন্য ওই কন্যারা জাহান্নাম থেকে অন্তরাল (পর্দা) স্বরূপ হবে। (সহিহ বুখারী : ১৪১৮)

৮. ফরজ সিয়ামের (রোজা) পাশাপাশি বেশি বেশি নফল সিয়াম (রোজা) পালন করা : রাসূল (সা.) বলেছেন, “রোজা (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য) ঢালস্বরূপ।” (বুখারী : ১৮৯৪) তিনি আরো বলেছেন, “ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একদিন রোজা রাখবে আল্লাহ ওই একদিন রোজার বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নাম হতে ৭০ বছর (পরিমাণ পথ) দূরে রাখবেন। (বুখারী : ২৮৪০) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা পালন করলো, অতঃপর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা আদায় করলো সে যেনো সারা বছর রোজা পালন করলো।” (মুসলিম : ২৮১৫) প্রতি মাসে তিনদিন রোজা রাখা : এ তিনটি রোজা আদায় করলে পূর্ণ বছর নফল রোজা আদায়ের সাওয়াব লাভ হয়। (মুসলিম : ২৮০৪) এ তিনদিন হলো চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ। একে ‘আইয়ামুল বিয’ বলে। রাসূল (সা.) মুসাফির ও মুকিম কোনো অবস্থাতেই এ ত্যাগ করতেন না। (নাসায়ী : ২৩৪৫)। প্রত্যেক সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা : রাসূল (সা.) বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি রোজা অবস্থায় থাকবো। (তিরমিযি : ৭২৫)

৯. মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকা : রাসূল (সা.) বলেছেন, “জাহান্নামের আগুন এমন প্রতিটি লোকের জন্য হারাম, যে লোকদের কাছাকাছি বা তাদের সাথে মিলেমিশে থাকে; যে কোমলমতি ন¤্র প্রকৃতির ও মধুর স্বভাববিশিষ্ট।” (তিরমিজি : ২৪৮৮)

১০. সন্তান বা আপনজনদের মৃত্যুতে ধৈর্যধারণ করা।

দুনিয়াবী কত রকমের বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আমরা কতরকমভাবে চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় বিপদ জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য উপরোক্ত উপায়গুলো জেনে সে অনুসারে আমল করা এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা সবচেয়ে বেশি জরুরি। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।