পঞ্চগড়ে লাশের পরিচয় মিলেছে, মাদকদ্বন্দ্বে হত্যা : গ্রেপ্তার ২

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড় ১০ এপ্রিল সদর থানার ধাক্কামারায় উদ্ধার হওয়া যুবকের লাশের পরিচয় মিলেছে।যুবকের নাম মোঃ মিলন (২৪)। তিনি দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার চকপ্রাণকৃষ্ণ এলাকার নাইমুল হাসানের ছেলে। মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে তাকে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে ছিলেন তারই এক বন্ধু।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া যুবক সুমন (২০) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া যুবক সুমন (২০) ও আবু হাসানকে (১৮) শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিনহাজুর রহমানের আদালতে হাজির করলে সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া এলাকায়।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সুমন আদালতে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর বর্ণনা দিয়েছেন। নিহত মিলন ও গ্রেপ্তার হওয়া সুমনের মধ্যে মাদক ব্যবসার টাকা পয়সা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল।

১০ এপ্রিল সুমনসহ কয়েকজন মিলনকে ফেনসিডিল কেনার কথা বলে পঞ্চগড়ে নিয়ে আসেন। পঞ্চগড়ে এসে সুমন কৌশলে মিলনকে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের আমতলা এলাকায় করতোয়া নদীর পাশে চা বাগানে নিয়ে যান। দুপুরে সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই নির্জন এলাকায় সুমন তার ব্যাগে থাকা লোহার রড দিয়ে মিলনের মাথায় একাধিক আঘাত করলে মিলন অচেতন হয়ে পড়েন।

এরপর সুমন মিলনের কাছে থাকা ৮০ হাজার টাকা এবং হাতের ঘড়ি ও মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরের পর স্থানীয় লোকজন চা বাগানের পাশে যুবকের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং ওই দিন রাতেই বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগে বাদামি রঙের এক জোড়া কেডস এবং লাশের পাশ থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ।

লাশ উদ্ধারের পর কোনো ওয়ারিশ না থাকায় লাশের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে পুলিশ এবং বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে এক দিন পর পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর নিহত ওই যুবকের নাম মিলন এবং তার বাড়ি দিনাজপুরের কাহারোলে বলে দাবি করে তার স্বজনেরা সদর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তার স্বজনেরা এসে ওই যুবকের ছবি ও কাপড় দেখে লাশটি মিলনের বলে শনাক্ত করেন।

এরপর পুলিশ স্বজনদের কাছ থেকে মিলনের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে কললিস্ট দেখে নিশ্চিত হয়ে তার ব্যবসায়িক সঙ্গী সুমন (২০) ও আবু হাসানকে (১৮) শুক্রবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ এলাকায় বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার সন্ধায় তাদের আদালতে হাজির করলে মিলনকে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন সুমন।