শিশুর বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার, গোলাগুলিতে নিহত অপহরণকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর পারিজাত আমতলা এলাকায় অপহৃত শিশু আলিফ হোসেনের (৫) বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। পরে এক অপহরণকারীকে গ্রেফতারে অভিযান চালানোর সময় গুলি বিনিময়কালে জুয়েল আহমেদ সবুজ (২১) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন দুই র‍্যাব সদস্যও।

রোববার দিবাগত রাতে কোনাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জুয়েল শিশু আলিফ হত্যার প্রধান আসামি বলে জানিয়েছে র‍্যাব। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার রাতে র‌্যাব ১-এর স্পেশালাইজ কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, কোনাবাড়ীর পারিজাত এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে আলিফ হোসেন গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

তিনি জানান, নিখোঁজের পরের দিন ফরহাদের মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আলিফকে অপহরণের কথা জানিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেলে আলিফকে খুন করার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।

সন্তানের হদিস না পেয়ে ফরহাদ র‌্যাব- ১ কে ঘটনা অবহিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে র‌্যাব।

আব্দুল্লাহ আল-মামুন আরও জানান, মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীরা গাজীপুরের পুবাইল রেললাইন অবস্থান করে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব ১-এর সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা সাগরকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

পরে তার দেয়া তথ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় তাদের ভাড়া করা তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি ঝুটের গুদামে লুকিয়ে রাখা প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর থেকে আলিফের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাগর জানান, তিন বন্ধু মিলে প্রায় ছয় মাস ধরে ভুক্তভোগীদের বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্লাটের ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করে আসছেন।

উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, ভবনের ছাদে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার কারণে সপ্তাহ খানেক আগে রুমমেট জুয়েল আহমেদ ও সবুজকে থাপ্পড় দেন আলিফের বাবা।

এতে ক্ষুব্ধ হয় তারা। এর প্রতিশোধ নিতে ও শিক্ষা দিতে জুয়েল বুধবার বিকেলে কৌশলে খেলার প্রলোভন দেখিয়ে আলিফকে বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়।

সেখানে তাকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন সাগর ও জুয়েল। পরে তারা শিশুটির মরদেহ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে একই ভবনে তাদের ভাড়া বাসার পাশের ঝুটের গুদামের ভেতর লুকিয়ে রাখেন।

তারা বাসায় রাত্রীযাপন করে পরের দিন সকালে পালিয়ে যান। পরে তারা বিভিন্ন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আলিফের বাবার কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

সাগর আরও জানান, এ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নিহত জুয়েল আহমেদ সবুজ। জুয়েল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী।