বাংলাদেশি তরুণীদের পাচার করে দুবাইয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতেন আজম

 

দেশে এবারই প্রথম কোনো মানবপাচারকারী সিন্ডিকেটের হোতাকে ধরা হলো বলে দাবি করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। আর সেই সিডিকেটের প্রধান হলেন আজম খান। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ছেলে। ১৯৯৬ সালে তিনি দুবাই পাড়ি জমান। তার পথ ধরে তার আরও দুই ভাই। তবে তার বাবা আগেই দুবাই থাকতেন। দুবাইয়ে তিনটি ৪ তারকা এবং একটি ৩ তারকা হোটেলের অন্যতম মালিক তিনি।

হোটেলগুলো হলো: ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স ক্লাব, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্রান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ার।

১০ হাজার টাকার লোভে অন্ধকার জগতে তরুণীদের ঠেলে দিতো দালালরা। সারা দেশে আজম খানের ৫০ জনের মতো দালাল আছেন। তারা ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে। দুবাইয়ের অভিজাত হোটেলে ওয়েট্রেস, ক্লাবে নৃত্য শিল্পীর কাজ দেয়ার নাম করে প্রলুব্ধ করতেন। বলা হতো মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে। এমনকি আস্থা অর্জনের জন্য বেতনের অগ্রিম হিসেবে যাওয়ার আগেই টাকা দেয়া হতো। একেক জন তরুণীকে পাচারের জন্য দেশীয় দালালরা পেতো মাত্র ১০ হাজার টাকা করে।

ব্রিফিংয়ে সিআইডি জানায়, দুবাইয়ে নিয়ে প্রথমে হোটেলে ছোটখাটো কাজ দেয়া হতো। পরে আটকে রেখে ড্যান্স বারে নাচতে এবং এক পর্যায়ে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হতো। করতে না চাইলে ইলেকট্রিক শকের মতো নানা নির্যাতন নেমে আসতো।

১৫-২০ বছরের তরুণীদের পাচার করা হতো ট্যুরিস্ট ভিসায়। এতো কম বয়সী নারীদের পর্যটক হিসেবে দুবাইয়ে যাওয়ার অস্বাভাবিক কাজটি বাস্তবায়ন করতো দুটি আন্তর্জাতিক এয়ার লাইন্স ও তাদের এজেন্টরা। তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানাতে নারাজ সিআইডি। গ্রেফতারের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানায়নি সিআইডি। তবে তারা বলছে, এ বছরের শুরুর দিকে আরব আমিরাত সরকার আজম খানের অপরাধের বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানায়। দূতাবাস আজম খানের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে। পরে সে দেশের সরকার দূতাবাসের দেয়া এক্সিট পাস দিয়ে আজম খানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে ফেরার পর গা ঢাকা দেয় আজম। তবে তার পিছু নেয় সিআইডি। এক পর্যায়ে গ্রেফতার হয় আজম খান।