রূপগঞ্জে জুস কারখানায় অগ্নিকান্ড : ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন

মো. সোহেল কিরণ, নিজস্ব প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার কারণ উদঘাটনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহবায়ক করে পাচঁ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে আছেন রুপগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিসের জেলা উপ-সহকারি পরিচালক, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের জেলার একজন কর্মকর্তা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, আগুনের ঘটনায় কতোজন নিখোঁজ আছেন তার একটি তালিকা প্রস্তুুত করতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তথ্য উপাত্থ সংগ্রহ করে সেই তালিকা তৈরির কাজ চলছে। স্বজনদের দাবি অনুযায়ী নিখোঁজদের নাম তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হবে। একই সাথে যারা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদেরও একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

এদিকে দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা ধরে পুঁড়ছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ এর সেজান জুস কারখানার ছয় তলা ভবনটি। বৃহস্প্রতিবার বিকেল সাড়ে ছয়টা থেকে শুক্রবার বেলা এগারোটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। শুক্রবার সকালে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলেও দমকল বাহিনীর কর্মীরা জানিয়েছেন। অগ্নিকান্ডের পর ভবনটির ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত দুই নারী শ্রমিকসহ চারজন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অর্ধশত শ্রমিক আহত হওয়ার পাশাপাশি পনের থেকে বিশজন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা দাবি করছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানে তাদের স্বজনরা কারখাখানাটির সামনে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন। তবে নিখোঁজের সংখ্যা কত তার কোন তালিকা এখনো প্রকাশ করেনি স্থাণীয় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ কারণে ক্ষুব্ধ স্বজনরা ও এলাকাবাসি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের উপর চড়াওসহ কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট এখনো একযোগে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কারখানাটির আশপাশে পানির ব্যবস্থা কম থাকায় একদিকে আগুন নিয়েন্ত্রনে আনা হলেও আরেক দিকে আগুন লেগে যাচ্ছে। তবে আগুন এখন পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রনে আছে। ভেতরে ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। কারখানটির উপরের ফ্লোরগুলোতে প্লাটিকসহ দাহ্য পদার্থ থাকায় বার বার আগুন জ¦লে উঠছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আসার পর ভেতরে কেউ আটকা পড়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পুরো ভবনটি তল্লাশি করা হবে।