কুয়াকাটায় নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত স্বপ্নের পদ্মা সেতু

জাকারিয়া জাহিদ,কুয়াকাটা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

সূর্যোদয় সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগর কন্যাখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। যেখানে আসলে সাগরের নীল জলরাশি আর ঢেউয়ের গর্জন পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় প্রতিটি মুহুর্তে। গত দুই দশকের বেশী সময়ে এখানে আগমন ঘটে দেশী বিদেশি হাজারো পর্যটকের। কিন্তু এখানে আসতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা।

ভাঙ্গা সড়ক আর একাধিক সেতু পার করে কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের জন্য ছিল নানারকম বিড়ম্বনা। পদ্মা সেতু চালু হলে ঘুরে দাড়াতে শুরু করবে স্থবির হয়ে থাকা নামি-দামি বিনিয়োগ কারীদের স্থাপত্য। যা পর্যটকদের সেবার মান বাড়াবে আগের থেকে কয়েকগুণ। অবসান ঘটবে কুয়াকাটায় পৌছানোর সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা এমনটাই প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক দম্পতি উম্ম সালমা এ প্রতিনিধিকে জানান, কুয়াকাটায় ভ্রমনের জন্য সবসময়ই মনটা প্রস্তুত থাকে। তবে পদ্মা নদীর মাওয়া ফেরি তাদের মুল প্রতিবন্ধকতা হিসাবে কাজ করতো। এবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনে তাঁদের আর কোন বাঁধা থাকবে না।

কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্টের জি এম, মো.নাসিমুল আজিম জানান, বেশ কয়েকবছর আমরা নির্দিষ্ট একটি সংখ্যক পর্যটক পেতাম। পায়রা সেতু উদ্ভোধনের পর আমরা পদ্মা সেতু উদ্ভোধনের অপেক্ষায় ছিলাম। আশা করছি এই সেতু খুলে দিলে বেশী পর্যটক হবে। সেই লক্ষে হোটেলের রুম, জনবল, সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছি যাতে আগত পর্যটকদের সেবার মান আগের থেকে বেশী দেয়া যায়।

ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, সেতু চালু হলে কুয়াকাটার একটি আমুল পরিবর্তন হবে। ঢাকা-কুয়াকাটার দূরত্বটা কমে যাওয়ার কারনে ১০-১২ ঘন্টার পথ ৫-৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে যে কারনে বর্তমানের থেকে কয়েকগুণ পর্যটক বেশি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে কুয়াকাটায় রাত্রিযাপনের ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজার রয়েছে। সেতু খুলে দিলে এর কয়েকগুণ পর্যটক হওয়ার সম্ভাবনায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ফাইভস্টার-থ্রিস্টার মানের হোটেল তৈরিতে অনেকে কাজ শুরু করছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম)এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন,সেতুটি আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলের বিশেষ করে কুয়াকাটা জন্য বড় একটি উপহার দিয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করছেন তারই কন্যা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণ পর্যটকের আগমন ঘটবে আমাদের কুয়াকাটায়।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো.কামাল জানান, রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতিতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উন্নয়নের আশার আলো দেখছে। এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক চাকা সচল হবে। এই সেতু উদ্বোধনের খবরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে অত্রঅঞ্চলের মানুষ।