রূপগঞ্জে প্রেম করার অপরাধে ছাড়পত্র দেয়ার অভিমানে স্কুলছাত্রের আত্নহত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি :

৯ম শ্রেণির ছাত্র হানিফ একই স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে আসছিলো দীর্ঘদিন ধরে। তারা স্কুল বারান্দায় কিংবা আশপাশে সুযোগ পেলেই কথাবার্তা বলতো। এমন প্রেমের সম্পর্ক সহপাঠীদের মাধ্যমে জেনে যায় শিক্ষকরা৷ এমনকি স্কুল ভবনের সিঁড়িতে উভয়কে একসনে পেয়ে শাসন করে শিক্ষকরা। শাস্তি হিসেবে মৌখিক ছাড়পত্র দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করতে বললে অভিমানে বিষপানে আত্নহত্যা করে প্রেমিক হানিফ। নিহত হানিফ হাটাবো ত্রিশকাহনিয়া এলাকার আজাহার মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২০ নভেম্বর রবিবার বিকালে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার সাত্তার জুট মিলস আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে।

হাটাবো হান্ডি মার্কেট এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, তার ভাতিজা হানিফকে স্কুলে গিয়ে পাশের বাড়ির মেয়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে দেখে শিক্ষকরা শাসনের নামে নানাভাবে অপমান করে। এমনকি শারীরিক শাস্তি দিয়ে পরবর্তীতে আর বিদ্যালয়ে না আসার কথা বলে। ছাড়পত্র দিয়ে বের করার হুমকী দেয় শিক্ষকরা।

পরে হানিফ অভিমান করে বাড়িতে গিয়ে বিষপান করে। আহত অবস্থায় হানিফকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত হানিফের সহপাঠী শান্ত জানায়, প্রেম করার অপরাধে শিক্ষকরা হানিফকে মারধর করে এবং স্কুল ছেড়ে দিতে বলায় অভিমান করেছে৷

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষার্থীরা অপরাধ করলে শিক্ষকরা শাসন করবেই। এটা যদি অপরাধ হয় তবে কোন জবাব নেই। আসল ঘটনা হলো, হানিফ ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। সে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে স্কুলের বিভিন্ন স্থানে কথাবার্তাসহ নানা অনিয়ম করে।

এমন অভিযোগ থাকার পর শিক্ষকরা নজরদারি করে। ঘটনার দিন টিফিনের সময় বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত গণিত শিক্ষক আহমেদুল কবির এবং ক্রীড়া শিক্ষক ইয়াকুব মিয়া তাদেরকে সিঁড়িতে দাড়িয়ে কথাবার্তা বলতে দেখে। এ সময় তাদের মৌখিক শাসন করে। পরে যথারীতি বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যায়। আমি বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের বাসায় থাকায় ঘটনা পরে জেনেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে হানিফের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে মর্মাহত হয়েছি। ছাড়পত্র দেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঘটনায় কোন প্রকার অভিযোগ বা মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এএফএম সায়েদ।