শিশু জান্নাতুল হত্যার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন গৃহকর্মী ফাতেমা

 

নিউজ ডেস্ক :
কতোটা পাষণ্ড হলে ঠুনকো অজুহাতে অন্যের ৫ বছরের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা যায়। অথচ ঘটনার সময় একই বয়সের নিজের সন্তানও পাশে থেকে মায়ের সেই অসভ্য ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেছে। আদালতে হাজির করার পরও ভাবলেশহীন ভাষায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেন এ নারী।

রোববার দুপুরে চাঁদপুরের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে গিয়ে শিশু জান্নাতুল মাওয়াকে হত্যার বর্ণনা দেয় গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। এ সময় তার শিশু সন্তান আরাফাতও সঙ্গে ছিল। পরে আদালত-৩ এর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হাসান জামানের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এদিকে সন্তান জান্নাতুল মাওয়া হত্যার ঘটনায় মা কাজল রেখা বাদী হয়ে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে অভিযুক্ত করে শনিবার মধ্যরাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানায় মামলা করেন।

শাহরাস্তি উপজেলা টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশিদ গ্রামের পুরান তালুকদার বাড়ি। শনিবার এ বাড়ির গৃহকর্ত্রী কাজল রেখার ৫ বছরের শিশু জান্নাতুল মাওয়াকে হাত ও পা বেঁধে বাড়ির পাশের ডোবার পানিয়ে চুবিয়ে হত্যা করে ফাতেমা বেগম। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার মধ্যরাতে থানায় মামলা করেন, নির্মম হত্যার শিকার শিশুর মা।


শাহরাস্তি থানার ওসি মো. শাহআলম জানান, দীর্ঘ ৫ মাস পর গতকাল শনিবার কাজল রেখার ঘরে ফের কাজ করতে যান গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম (২৫)। কাজের ফাঁকে সঙ্গে নিয়ে আসা নিজের সন্তান আরাফাতকে (৫) খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি।

এ সময় নিজের সন্তান খুঁজে পেতে জান্নাতুল মাওয়াকে বলেন ফাতেমা। কিন্তু শিশুটি অন্যমনস্ক থাকায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। এতে কৌশলে জান্নাতুল মাওয়াকে বাড়ির বাইরে ডেকে নেন ফাতেমা বেগম। এ সময় পাশের ডোবার পাশে নিয়ে নিজের ওড়না ও কাপড়ের টুকরো দিয়ে শিশুটির হাত পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই ডোবার পানিতে চুবিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে জান্নাতুল মাওয়াকে।

ওসি আরও জানান, ফাতেমার শিশু সন্তান আরাফাত এমন দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে। এই শিশুটিও পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।

এদিকে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল রোববার দুপুরে চাঁদপুরের আদালতে অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম ও তার শিশু সন্তান আরাফাতকে হাজির করেন। এ সময় অভিযুক্তের ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে আদালত-৩ এর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হাসান জামানের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্তা ফাতেমা বেগম তার বড় বোন আরবের নেছার সঙ্গে টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশিদ গ্রামেই থাকেন। আর এই গ্রামে থেকে তারা দুইবোন বিভিন্নজনের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন।