ধর্ষণ চেষ্টাকারীর ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে বিপদে গৃহবধূ

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি :

ভোলার চরফ্যাসনে ধর্ষণের চেষ্টাকারীর বিশেষ অঙ্গ কেটে নিজের সম্ভ্রম রক্ষাকারী গৃহবধূর পরিবার এখন ভুগছে নিরাপত্তহীনতায়।

ঘটনার ১৩ দিনে পরেও গ্রেফতার হয়নি ধর্ষণের চেষ্টায় বিশেষ অঙ্গ হারানো মো. নঈম। পুলিশের চোখ এড়িয়ে নঈমের লোকজন নির্যাতিতা গৃহিণী ও ঘটনার সাক্ষীদের এলাকা ছাড়ার জন্য দিচ্ছে হুমকি। আদালতে দায়ের করেছে একাধিক মিথ্যা মামলা। এ অবস্থায় অভিযুক্ত মো. নঈমকে গ্রেফতার করে অসহায় পরিবারসহ সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি এলাকাবাসীর।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে চরফ্যাসন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ভাষানচর গুচ্ছ গ্রামে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে একই এলাকার নঈম। লম্পট নঈমের বিশেষ অঙ্গ কেটে নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করে ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় পরদিন নঈমকে আসামি করে শশীভুষণ থানায় মামলা করা হয়। আহত নঈম প্রথমে চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও পুলিশ এখনও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই নঈমের বাবা আজম আলী সরদারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা নির্যাতিতাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। রাতের আধারে হামলা চালিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি আদালতে দায়ের করেছে একাধিক মিথ্যা মামলাও। মানুষের মল-মূত্র এনে ঘরের সামনে ফেলে যাতায়াতে বাঁধা সৃষ্টি করছে।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহিণী জানান, নঈমের আত্মীয়স্বজনরা রাতের আঁধারে গুচ্ছ গ্রামে ঢুকে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছে। এতে তিনি আতংকিত। এ ঘটনায় ১০ অক্টোবর শশীভুষণ থানায় একটি জিডি করেছেন তিনি।

শুধু নির্যাতিতা নয়, ঘটনার সাক্ষীদেরও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে নঈমের বাবা আজম আলী সরদারের বিরুদ্ধে।

অব্যাহত হুমকির পাশাপাশি আজম আলী সরদার বাদী হয়ে চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১ অক্টোবর একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় নির্যাতিতা গৃহবধূ, ঘটনার সাক্ষীসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ আসামিরা নঈমকে ডেকে এনে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বিশেষ অঙ্গ কাটতে চেয়েছে। তবে নির্যাতিত গৃহবধূ ও ঘটনার সাক্ষীদের হয়রানি করতেই মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা উল্লেখ করেন।

পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, আসামি পলাতক রয়েছে। ভোলা-বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায়নি। এখন ঢাকার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া হুমকিদাতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারীর পরিবার নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে এক বছর আগে ভাষানচর গুচ্ছ গ্রামে আশ্রয় নেয়।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

১০ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২৫ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২২ সফর ১৪৪২ হিজরি, শনিবার