চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদের সৃজনশীলতায় বদলে গেছে থানার চিত্র

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী-চাঁদপুর :
একজন দক্ষ অফিসার (ইনচার্জ) হিসেবে এবং জনগণের সকল সেবা দ্বারে দ্বারে পৌঁছানোর লক্ষ্যে থানা পুলিশের চীর-চেনা রূপকে পাল্টে দিয়েছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তার কর্তব্যনিষ্ঠার কারণে থানার অনেক উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় জনগনের মাঝে ব্যাপক প্রসংশা অর্জন করতে সফল হয়েছেন।

চাঁদপুর জেলার ৮ টি থানার মধ্যে একটি সদর মডেল থানা। থানা মানেই টাকা। টাকা ছাড়া থানায় কোনো কাজ হয় না। এমন ধারণা জনসাধারণের। তবে জনসাধারণের সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। এ থানায় সেবা নিতে আসা লোকজন টাকা ছাড়াই এখন সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ ও মামলা লেখা বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারছেন। পুলিশের আচরণ যেমন পাল্টেছে, তেমন থানার চিত্রও বদলেছে। এতে আগের তুলনায় থানায় সেবার মানও বেড়েছে। ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদের সৃজনশীলতায় বদলে গেছে থানার চিত্র।

তিনি ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী চাঁদপুর জেলার সদর মডেল থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, অবৈধ অস্ত্রধারী, জঙ্গিমুক্ত ও রাহাজানিমুক্ত করে শান্তির জনপথ হিসেবে সদর মডেল থানা যেন মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয় সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে কাজ শুরু করে অতি সংক্ষিপ্ত সময়ে একাধিক মাদককারবারি অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধারে সক্ষম হওয়াতে যোগদানের মাত্র এক বছরের মধ্যে জেলার পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম-বার এর কাছে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেন মুহাম্মদ আবদুর রশিদ।

তিনি এ থানায় যোগদানের পর থেকেই মানবিক ও জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করেন। তবে পুলিশ বিভাগে রয়েছে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রশিদ এর মতো হাজারো মানবিক পুলিশ অফিসার। যিনি সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদপুর শহরে কেনাকাটার জন্য আগত মহিলাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা ও গুনরাজদী এলাকার প্রতিবন্ধী মনির হোসেনের চুরি হওয়া ইজিবাইকের ১ লাখ টাকা প্রদান করে জনসাধারণের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।

অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ চাঁদপুরের মানুষের চোখে একজন সৎ, আদর্শবান, নিষ্ঠাবান ও গরিবের বন্ধুসুলভ পুলিশ অফিসার। অধিকাংশ মানুষই তাকে গরীবের বন্ধু ভাবে। তিনি তার সততা ও বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তা এবং মেধা দিয়ে তার দায়িত্বরত এলাকা মাদ কনির্মূল, সন্ত্রাস দমন, চাঁদাবাজীমুক্ত, চোর-ডাকাতের উৎপাত ও দখল বাজদের হাত থেকে এলাকায় কঠোর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করছেন। তার চোখে ধনী-গরীব, জেলে, রিক্সাচালক হতে সব শ্রেণীপেশার মানুষ সমান।

তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বেশে মানুষের মাঝে উপস্থিত হয়ে মানুষের সুখ দুঃখের কথা শুনছেন। “মামলা নয়, আপোষ হলে ভালো হয়”-এই স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর থানায় অধিকাংশ অভিযোগ বাদী-বিবাদীর মধ্যে আপোষের মাধ্যমে সমাধান করে দেন। ফলে তিনি থানায় যোগদানের পর থেকে বিগত সময়ের তুলনায় থানায় মামলা বহুলাংশে কমে গেছে। তার মতো দক্ষ, সৎ ও কর্তব্যপরায়ন পুলিশ অফিসার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য গর্ব। প্রতিটি অপরাধ দমনে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রশিদ এর মতো পুলিশ অফিসারের সান্নিধ্য পেলে অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করবে বলে মানুষ মনে করে।

তার ছুটে চলা সর্বত্র। কখনও তিনি লাঠি হাতে সড়কে, কখনো অসহায় এতিম শিশুদের পাশে, কখনও হিজরা সম্প্রদায় ও বেদে সম্প্রদায় পাশে থেকে নিজের সামর্থ্য মত সাহায্য করা। এসবের একটাই লক্ষ্য- মানুষের সেবা ও আস্থা অর্জন। একজন নেতা যেমন কর্মীদের অনুপ্রেরণা দিয়ে নেতৃত্ব প্রদান করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যান, একজন কোচ যেভাবে কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে শিষ্যের কাছ থেকে সেরাটুকু বের করে নিয়ে আনেন । একইভাবে তিনি তাঁর অফিসারদের কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে কাজ করিয়ে নেন। শত বিপদে, প্রতিকূলতার মধ্যে যিনি বট গাছের ন্যায় আগলে রাখেন অধীনস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের। ভালোবাসায় মুগ্ধ হন সাধারণ মানুষও।

থানায় আসা এক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি জানান, ওসি স্যার থানায় যোগদানের পর থেকে চুরি-ডাকাতি কমে যাওয়ায় রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি। তিনি একজন অসাধারণ ভালো মানুষ। জানতাম না এতো মানবিক অনুভূতির পুলিশও আছে।

থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওসি স্যারের অসংখ্য সৃজনশীল নির্দেশনা তৈরি করে অধীনস্থ অফিসারদের নিয়ে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে চাঁদপুরবাসীর কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া সুপার হিরো আমাদের অভিভাবক মুহাম্মদ আবদুর রশিদ স্যার।

ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কোনো চাওয়া-পাওয়ার জন্য নয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভালো লাগার জায়গা থেকে মানবিক ও জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। মানবিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যে কোনো অপরাধ দমন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে সর্বদা আমি সজাগ আছি। একজন পুলিশের কাছে সেটাও সম্ভব একজন অপরাধীকে ঘৃণার দৃষ্টিতে না দেখে আইনের মাধ্যমে তাকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখে আলোর পথে নিয়ে আসা। আমরা চেষ্টা করতে পারি তাকে ভালো করার সুযোগ দেয়ার। আপনারা আমাদের সাহায্য করুন আমরা সত্যিই মানুষের স্বপ্নের পুলিশ হতে চাই।

তিনি আরও বলেন আইনের সেবক হয়ে জনতার সারিতে থেকে সাধারণ মানুষের সেবা করে যাবো, প্রতিটি মানুষ আমাকে খুব কাছ থেকে পাবে এবং তাদের সমস্যার কথা গুলি বলতে পারবে। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন চাঁদপুরের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় নিজ কর্মস্থলে সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের সহিত দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য: চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ মাদক উদ্ধার, ওয়ারেন্ট তামিলসহ মোট ১৮ টি ক্যাটাগরীর মধ্যে ১৪ টির সফলতায় ৯ম বার চাঁদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ হয়েছেন। তিনি একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও বিচক্ষণ অফিসার। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি সকলের নিকট প্রশংসিত। তিনি এ জেলায় কর্মকালীন সময়ে সকলের সহযোগিতা ও দোয়া চেয়েছেন।