চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার ইলিশ চড়া দামে বিক্রি, ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী. চাঁদপুর :
চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনার রুপারী ইলিশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। যা’সাধারন ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় নৌযান দিয়ে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ। দেশের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের আমদানি নেই। যে কারণে পদ্মা-মেঘনায় জেলেদের আহরিত স্বল্প সংখ্যক রূপালী ইলিশ খুবই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি ওজনের একটি ইলিশের পাইকারী মূল্য ৬ হাজার ৪’ শ টাকা। সে হিসেবে এক ইলিশের দামে সাড়ে ৮ কেজি গরুর গোশত পাওয়া যাবে। অর্থাৎ চাঁদপুরে প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হয় ৭৫০টাকা।

বুধবার (৩১ মে) বিকেলে মাছঘাটে গিয়ে দেখাগেল নিরবতা। আগের মত সরগরম নেই মাছঘাট। মাত্র কয়েকজন ব্যবসায়ী স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার কিছু ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ বিক্রি করছেন। পাইকারী বিক্রির জন্য নেই কোন হাকডাক। ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। অনেক আড়তে ব্যবসায়ী শ্রমিকরা অবসর বসে আছেন, আবার কেউ আড়তেই ঘুমাচ্ছেন।

শাহরাস্তি থেকে তাজা ইলিশ ক্রয় করতে এসেছেন ফয়েজ আহমেদ। তিনি বলেন, ইলিশের দাম অনেক বেশী। দুটি ৭০০ গ্রামের ইলিশ কিনেছি ২হাজার ৫শ’ টাকা দিয়ে। ধারণা ছিলো দেড় হাজারের মধ্যে কিনতে পারব। তবে সাগরের ইলিশ নয়, সে জন্য বেশী দামে নিয়েছি।

ঢাকা থেকে কয়েকজন যুবক ইলিশ ক্রয় করতে এসেছেন। তারা দরদাম করছেন। কিন্তু তাদের বাজেটের মধ্যে না হওয়ায় কিনতে পারছে না। আড়ৎ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। প্রায় প্রত্যেক আড়তেই দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০টাকা। পাশের আড়তে গলদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ৮০০টাকা। পোয়া মাছ প্রতিকেজি ৪৫০ থেকে সাড়ে ৫০০টাকা।

মেসার্স ভাই ভাই মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ক্রয় করেছি ৮১হাজার টাকা মণ। আর দুই কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ কম।

খুচরা ইলিশ বিক্রেতা মো. শাহীন বলেন, কম দামে ইলিশ কেনা যায় না, বিক্রি করবো কিভাবে। কিছু ক্রেতা আছেন, যারা চাঁদপুরের বাহির থেকে আসেন। স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ হলে তারা দামের কথা চিন্তা করেন না। বেশী দাম হলেও ক্রয় করেন। আমরা কাছে বড় সাইজের ইলিশ বেশী। দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৩ হাজার ২০০টাকা।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে ইলিশ কমই পাওয়া যায়। আশা করছি জুলাই মাস থেকে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের প্রাপ্যতা বাড়বে। এছাড়াও সরকারিভাবে মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশের নিষাধাজ্ঞা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় এখন জেলেরা কিছু সংখ্যক পরিপক্ক বড় সাইজের ইলিশ পাচ্ছে।