সীমান্তে ধরা পড়লেন রূপগঞ্জের মোশা বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ

প্রিয় সময় নিউজ রূম :

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মোশা বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে মোশা দেশ থেকে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। তিনি অবৈধভাবে ভারতে পালানোর পরিকল্পনার উদ্দেশে সহযোগী দেলোয়ারকে নিয়ে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে আত্মগোপন করেন। তবে দেশ ত্যাগ করার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাব বলছে, হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, চাঁদাবাজি, মাদক, প্রতারণাসহ অন্তত ৪০ মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশা।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুর রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ২৫ মে রূপগঞ্জে স্থানীয় মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলাসহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তাতে ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়। এ ঘটনায় র‌্যাব জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায়, র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে গতরাতে ভুরুঙ্গামারী থেকে রূপগঞ্জের ওই ঘটনায় জড়িত মোশারফ হোসেন ও সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন যাবত রূপগঞ্জ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জমি দখল, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। মোশার দলের সদস্য সংখ্যা ৭০-৮০ জন।

মোশারফের নেতৃত্বে দলের সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দেশী ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন।

গত ২৫ মে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সৃষ্টি হলে মোশা বাহিনীর ৭০-৮০ জন এলাকায় শোডাউন, লোকজনকে মারধর ও গুলিবর্ষণ করে। স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হলে মোশা বাহিনীর সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এক পর্যায়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চড়াও হয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৫/৬ জন পুলিশ সদস্যকে আহত করে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফকে ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর মোশারফ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী এলাকায় আত্মগোপনে চলে যান। তার ভারতে পালানোর পরিকল্পনা ছিল। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মোশারফ সম্পর্কে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মোশারফ স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সে ‘মোশা বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪০টির অধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন।